প্রতারণা করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটায় চাকরি: ৭ বছরের কারাদণ্ড

মুক্তিযোদ্ধার সন্তান না হয়েও সনদ জালিয়াতি করে ‘মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ কোটায় সরকারি চাকরি নেওয়ার অপরাধে সাত বছর জেল খাটতে হবে সাবেক সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামানকে।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Nov 2019, 02:08 PM
Updated : 12 Nov 2019, 02:08 PM

ঢাকার ৭ নম্বর বিশেষ জজ মো. শহিদুল ইসলাম মঙ্গলবার এই রায় ঘোষণা করে বলেছেন, চাকরির জন্য এই প্রতারণা করে ‘মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগকে অপমান’ করেছেন মনিরুজ্জামান।

শুল্ক, আবগারী ও ভ্যাট কমিশনারেট ঢাকার (পশ্চিম) সাবেক কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া থানার তেবাড়িয়া গ্রামের মো. আব্দুস সামাদের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।

এ মামলায় দুদকের আইনজীবী মো. রেজাউল করিম রেজা জানান, প্রতারণার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দণ্ডবিধির ৪২০ ধারায় ৭ বছর, প্রতারণার উদ্দেশ্যে জালিয়াতির অভিযোগে দণ্ডবিধির ৪৬৮ ধারায় ৭ বছর এবং জেনেশুনে জাল সনদ ব্যবহারের অভিযোগে দণ্ডবিধির ৪৭১ ধারায় দুই বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে মনিরুজ্জামানকে।

পাশাপাশি তাকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন বিচারক। ওই টাকা না দিলে তাকে আরও ১ বছরের সাজা খাটতে হবে।

সব মিলিয়ে ১৬ বছরের কারাদণ্ডের রায় হলেও সবগুলো ধারার দণ্ড একসঙ্গে কার্যকর হবে বলে সাবেক ওই রাজস্ব কর্মকর্তাকে সাত বছরের সাজাই ভোগ করতে হবে। 

বিচারক তার রায়ে বলেন, মো. মনিরুজ্জামান মুক্তিযোদ্ধার সন্তান নন। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল সামাদের নাম ঠিকানা ব্যবহার করে তিনি সনদ জালিয়াতি করেছেন।

“আসামির এমন অপকর্মে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের পরিচয়, স্বীকৃতি ও সুবিধাদি হুমকির সম্মুখিন হয়েছে। ফলে আসামি কোনো অনুকম্পা পেতে পারে না। অন্যান্যদের জন্যও এই রায় বার্তা হিসেবে কাজ করবে।”

মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটায় ২০১৪ সালের ১১ মে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা পদে চাকরি পান মনিরুজ্জামান। কিন্তু তার সনদ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে দুদক ওইবছর ১৩ জুলাই অনুসন্ধান শুরু করে।

প্রথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে রমনা থানায় মামলা করেন দুদকের উপপরিচালক এস এম গোলাম মাওলা সিদ্দিকী।

২০১৬ সালে দুদক মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিলে ওই বছর অভিযোগ গঠন করে ওই সরকারি কর্মকর্তার বিচার শুরু করে আদালত।