ঝুঁকিপূর্ণ সাতটি জেলাসহ সম্ভাব্য দুর্গত এলাকাগুলোর ১৮ লাখ মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়ার পরিকল্পনার কথা শনিবার দুপুরে জানিয়েছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান।
দুপুরের পর বাগেরহাটের মোংলা উপজেলা সদরে রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবকদের দেখা গেল, আশ্রয় কেন্দ্রে মানুষকে যেতে প্রচার চালাচ্ছেন তারা।
তাদের সাথে কথা বলে জানা গেল, মোংলা এলাকায় বেশ কিছু আশ্রয় খোলা হয়েছে। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ বন্দর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একটি অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র খুলেছে।
শেষ বিকালে সেখানে গিয়ে তেমন বেশি মানুষকে দেখা যায়নি। যারা এসেছিলেন, তাদের ‘বলে-কয়েই’ আনা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্রে।
এখানে মূলত বন্দর শ্রমিকদের জন্যে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৯০ বছর বয়সী জয়তুন বেওয়াকে নিয়ে এসেছেন তার ছেলে। আশ্রয় কেন্দ্রের পাশেই তাদের বাড়ি। তাদের চোখ মুখেও তেমন দুর্ভাবনার চিহ্ন নেই। আর যারা এসেছেন তারাও বসে আছেন ভাবনাহীন।
“আর এখন তো ডিজিটাল যুগ। রেডিও টিভির সংবাদ সবাই দেখছে। ঝড় সত্যিই আসার আলামত টের পেলেই তবে লোকজন আশ্রয় কেন্দ্রে আসবে।”
কেউ কেউ জানান, ঘরের জিনিসপত্র, গরু-ছাগল ছেড়ে তারা আসতে চান না আশ্রয় কেন্দ্রে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন) গিয়াস উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলার সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছি। শুকনো খাবার-দাবার থেকে শুরু করে দিয়াশলাই, সবকিছুই আমাদের মজুদ আছে।”
ঘষিয়াখালী চ্যানেলের ওপারে জেলে পল্লীতে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার পথে নৌকার মাল্লা আবদুল হালিম বলেন, এই ঝড় জোয়ারের সময় আসছে বলে জলোচ্ছ্বাস হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
মংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাহাত মান্নান বলেন, “মোংলা সদরে অনেকের ই পাকা বাড়ি আছে। ফলে সদরে মানুষের আশ্রয় কেন্দ্রে আসার হার কম। কিন্তু প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিশেষ করে সুন্দরবন লাগোয়া গ্রামগুলোতে মানুষজন ইতোমধ্যেই মানুষজন আশ্রয় কেন্দ্রে এসে গেছে। তবে যাই ঘটুক না কেন আমাদের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি আছে।”
মোংলাজুড়ে এরকম ৮৪টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসাসহ প্রশাসনের কাজে সাহায্য করছে ২ হাজার ৬৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক।
মোংলার মতো চিত্র দেখা গেছে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায়ও। সেখানকার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিতে পুলিশকে মাঠে নামিয়েছেন।
ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমানও বলেন, প্রাণহানি এড়াতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে প্রয়োজনে বাধ্য করা হবে।