রোহিঙ্গাদের নিয়ে আপনারাও লিখুন: লিট ফেস্টে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী

ঢাকা লিট ফেস্টে আগত বিদেশি লেখক, কবি ও সাহিত্যিকদের প্রতি রোহিঙ্গাদের নিয়ে লেখার আহ্বান জানিয়েছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Nov 2019, 06:02 PM
Updated : 7 Nov 2019, 06:02 PM

বৃহস্পতিবার বাংলা একাডেমিতে ‘ঢাকা লিট ফেস্ট’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এই আহ্বান জানান বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আমাদের সাহিত্যের ওপর প্রতিবেশীর যে আগ্রাসন, বিশেষ করে মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের অপসংস্কৃতির অনুপ্রবেশ ঘটছে।”

অতিথি লেখকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “এই রোহিঙ্গাদের নিয়ে আপনারাও লিখুন।”

এবার লিট ফেস্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসেছিলেন ম্যান বুকার পুরস্কারজয়ী সাহিত্যিক মনিকা আলী। অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন ঢাকা লিট ফেস্টের পরিচালক সাদাফ সায্, কাজী আনিস আহমেদ, আহসান আকবর, টাইটেল স্পন্সর বাংলা ট্রিবিউনের সম্পাদক জুলফিকার রাসেল ও ঢাকা ট্রিবিউনের সম্পাদক জাফর সোবহান। সাধনা নৃত্য গোষ্ঠীর পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।

এই সাহিত্য সম্মেলনের পরিচালক আহসান আকবর বলেন, “তিন দিনের এই উৎসবে দেশি ও বিদেশি সাহিত্যকে তুলে ধরা হবে। ঢাকা লিট ফেস্ট ফিকশনের সঙ্গে বিজ্ঞান, বিজ্ঞানের সঙ্গে কবিতা, কবিতার সঙ্গে কলার মেলবন্ধন ঘটায়। বাক স্বাধীনতা, বহুত্ববাদ এবং রাজনীতির বিভিন্ন প্রেক্ষাপট ও মুক্তচিন্তার গুরুত্ব নিয়ে আমাদের আয়োজন সাজানো হয়।”

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরে বাংলা একাডেমির আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে ‘প্ল্যানারি ফিকশন: রেজিস্ট্যানস অর রিফিউজ’ সেশন শুরু হয়।

এতে উপস্থিত ছিলেন মনিকা আলী, ভারতীয় লেখক সুমনা রায়, ব্রাজিলের লেখক মারিয়া ফিলোমেনা বইসো লেপেসকি, ফিনল্যান্ডের মিন্না লিন্ডগ্রেন, ব্রিটিশ-ব্রাজিলীয় লেখক জারা রদ্রিগেজ ফাউলার।

মনিকা আলী বলেন, “ফিকশন হল ছোট ছোট জিনিসকে আবেগ ও কাব্যিকতার ছোঁয়ায় বড় পরিসরে ধরা।”

তার মতে, সাহিত্যিক পরিচর্যায় যে কোনো ক্ষুদ্র জিনিস বড় পরিসরে তুলে ধরা যায়।

মিন্না লিন্ডগ্রেন বলেন, “সোশ্যাল লাইফের গল্পকে তুলে ধরা আমার কাজ। আমি বয়স্ক মানুষের গল্প লিখি। আমি লেখায় বয়স্ক ব্যক্তির ভালোবাসা ও অপ্রাপ্তির বিষয় ফুটিয়ে তুলেছি। তাই আমার কাছে ফিকশন হলো সমাজের কথা বলা।”

পরে বাংলা একাডেমির কসমিক টেন্টে ‘কবিতা আড্ডা: এপার ওপার’ শীর্ষক সেশনে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবিবুল্লাহ সিরাজীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ভারতের কবি মৃদুল দাশগুপ্ত, জহর সেন মজুমদার, গৌতম গুহ রায়।

কবি জহর সেন বলেন, “কবিতা কোনও নির্দিষ্ট কেন্দ্রবিন্দুতে সীমাবদ্ধ নয়, কবিতা ক্রমশ প্রসারিত।”

কবি মৃদুল দাশগুপ্ত বলেন, “প্রকৃত সাহিত্য সাধনা কবিতার ভাষাকে সমৃদ্ধ করতে পারে। কবিতার কোনও দেশ নেই।”

‘ভাঙা বাংলা: ত্রস্ত নিলীমায়’ সেশনে ভারত ভাগের বিশদ আলোচনা করেন পশ্চিমবঙ্গের ঔপন্যাসিক স্বপ্নময় চক্রবর্তী এবং বাংলাদেশের ঔপন্যাসিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।

বিকাল ৪টায় আবদুল করিম সাহিত্য মিলনায়তনে দেওয়া হয় জেমকন তরুণ সাহিত্য পুরস্কার।

অভিষেক সরকারের ছোটগল্প ‘নিষিদ্ধ’ এবং রফিকুজ্জামান রণির ‘ধোঁয়াশার তামাটে রঙ’ কবিতার পাণ্ডুলিপির জন্য তাদের পুরস্কৃত করা হয়।

জেমকন গ্রুপের পরিচালক কাজী আনিস আহমেদ তাদের হাতে পুরস্কার হিসেবে এক লাখ টাকার চেক ও ক্রেস্ট তুলে দেন।

বিকাল ৫টায় বাংলা ট্রিবিউনের সম্পাদক জুলফিকার রাসেলের গীতি কবিতার প্রথম খণ্ডের মোড়ক উন্মোচন হয়।