গার্মেন্ট খাতে ব্যবসায়ীদেরও দোষ দেখছেন বাণিজ্যমন্ত্রী

দেশে তৈরি পোশাক শিল্পে কাজ পাওয়ার জন্য দাম কমিয়ে দেওয়ায় রপ্তানি প্রবৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Nov 2019, 12:18 PM
Updated : 6 Nov 2019, 02:28 PM

আর গত তিন মাস ধরে চলা এই নেতিবাচক ধারা কাটাতে ব্যবসায়ীরা ব্যাংক ‍ঋণে সুদের হার কমানো, আয়কর প্রত্যাহার, বন্দরের জট কমানো, নগদ সহায়তা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন মন্ত্রীর কাছে।

গার্মেন্ট শিল্পের বিদ্যমান সমস্যা নিয়ে বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এক বৈঠকের পর মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “ব্যবসায়ীদের একটা সমস্যা আছে, সেটা তাদের দোষ। তারা নিজেরা নিজেরা আন্ডারকাট করে প্রাইসটা এমন অবস্থায় নিচ্ছে, যাতে করে দামও পাচ্ছে না। প্রাইসের ওপর সেটার প্রভাব পড়ছে।”

নিজেও যে একজন গার্মেন্ট ব্যবসায়ী, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে টিপু মুনশি বলেন, “আমি জানি যে সেই ধরনের একটি সমস্যা রয়েছে। অনেক সময় দেখা যায় কাজ পাওয়ার জন্য তারা দাম কমিয়ে দিচ্ছে। সেটার প্রভাব পড়ছে মোট রপ্তানি আয়ের ওপর।”

বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৮৫ শতাংশই আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। কিন্তু চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) এ খাতের রপ্তানি আয় গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ কমে গেছে, যা নিয়ে সরকারও উদ্বিগ্ন।

ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “কিছু সমস্যা আমাদের হয় ক্লিয়ারেন্সের জন্য, জাহাজিকরণের জন্য অনেক সময় লাগে, বন্দরে দীর্ঘসময় থাকে। এছাড়াও অনেক কারণ রয়েছে। এসব ব্যাপারে কথা হয়েছে।”

ব্যাংকগুলোর ডলার কেনা ও বিক্রির মধ্যে দামের যে পার্থক্য আছে, সেটাও ব্যবসায়ীরা তুলে ধরেছেন বলেন জানান মন্ত্রী।

পাশাপাশি বেসরকারি ব্যাংকগুলোর সুদ হারকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে চিহ্নিত করে তিনি বলেন, “একনেকের বৈঠকে বিশাল আলোচনা হয়েছে। কীভাবে সেটি কমানো যায়…।

“আরেকটি বিষয় আলোচনা হয়েছে, ট্যাক্স রেভিনিউ কালেকশন দরকার দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। যেটা আমাদের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ সাজেস্ট করেছেন, এই ট্যাক্স যেটা আনা হয়, তার পরিধি যাতে বাড়ানো হয়। করযোগ্য যারা ট্যাক্সেশনের বাইরে রয়েছে, সেটা কভার করলে রেগুলার যারা ট্যাক্স দেয়া তাদের ওপর চাপ কমবে।”

বিশ্ব বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে এসব সুপারিশ ‘আমলে নেওয়া হবে’ জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “সেটার জন্য সবদিকেই চেষ্টা করতে হবে। ব্যবসায়ীরা সরকারের কাছে যে সাহায্য চেয়েছে, সেগুলো কনসিডারেশনে নিলে আমাদের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়বে বলে আশা করি।”

নগদ সহায়তার দাবির বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “যেটুকু নগদ সহায়তা পাচ্ছি তাতে কিছু ট্যাক্সেশনের ব্যাপার এসেছে। এনবিআরের চেয়ারম্যান বলেছেন, সেটা ঠিক করে দেবেন। যেটা ট্যাক্স এসেছে, সেটা কমাবে বলে মনে হয়েছে।”

অন্যদের মধ্যে অর্থসচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান (এনবিআর) মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, বিজিএমইএ এর সভাপতি রুবানা হকসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো এবং এনবিআরের কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।