বঙ্গোপসাগরে ঝড়ের আভাস

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি ঘনীভূত হয়ে পরিণত হয়েছে গভীর নিম্নচাপে, যা ঘূর্ণিঝড়ের রূপ পেতে যাচ্ছে বলে আবহাওয়াবিদদের ধারণা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Nov 2019, 07:00 AM
Updated : 6 Nov 2019, 07:04 AM

নিম্নচাপের প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোতে ১ নম্বর দূরবর্তী সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নান বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গভীর নিম্নচাপটি আজ সন্ধ্যা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। তখন এ ঝড়ের নাম হবে বুলবুল। ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে সতর্ক সংকেতের মাত্রাও বাড়ানো হবে।”

এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগর তীরের আট দেশের আবহাওয়া দপ্তরের নির্ধারিত তালিকা থেকে ধারাবাহিকভাবে এই অঞ্চলের ঝড়ের নাম দেওয়া হয়। বুলবুল নামটি নেওয়া হচ্ছে পাকিস্তানের প্রস্তাবিত নামের তালিকা থেকে।

আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে,পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি বুধবার সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১০০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে; কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে; মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।

ওই সময় নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছিল।

এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে বলে জানানো হয়েছে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে।

 

ভারতের আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস বলছে, বুধবার রাত ৮টা নাগাদ নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ের রূপ পেতে পারে। তখন বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ উঠতে পারে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটারের ওপরে।

বৃহস্পতিবার বিকালে আরও শক্তিশালী হয়ে এ ঝড় তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে (সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম) পরিণত হতে পারে । তখন বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার।

বর্তমান অবস্থান থেকে পশ্চিম-উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ঘূর্ণিঝড়টি আগামী ১১ নাভেম্বর নাগাদ ভারতের ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিম অংশ হয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে ভারতীয় আবহাওয়াবিদরা মনে করছেন।

এর আগে গত মে মাসের শুরুতে ঘূর্ণিঝড় ফণী ওই এলাকা দিয়েই উপকূল অতিক্রম করে ভারত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিল। 

আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নান জানান, গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের কাছে সাগর উত্তাল থাকায় আপাতত চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এ সময় উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।