ক্যাসিনোকাণ্ড: যুবলীগের আনিস ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

অবৈধ সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগে যুবলীগের বহিষ্কৃত দপ্তর সম্পাদক কাজী আনিসুর রহমান ও তার স্ত্রী সুমি রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Oct 2019, 08:53 AM
Updated : 29 Oct 2019, 09:33 AM

আনিসের বিরুদ্ধে মামলায় ‘ক্যাসিনোর কারবারের মাধ্যমে’ ঘোষিত আয়ের বাইরে ১২ কোটি ৮০ লাখ টাকার সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।

আর আলাদা মামলায় ঘোষিত আয়ের বাইরে এক কোটি ৩১ লাখ ১৬ হাজার ৫০০ টাকার সম্পদ থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে সুমির বিরুদ্ধে।

কমিশনের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে মঙ্গলবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি দায়ের করেন বলে জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য জানান।

ক্যাসিনোকাণ্ডে যুবলীগ নিয়ে সারা দেশে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে আনিসুরের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর গত ১১ আক্টোবর তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।

যুবলীগের কেন্দ্রীয় অফিসে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে ২০০৫ কাজ শুরু করেন গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের ছেলে আনিস। সাত বছর পর কর্মচারী থেকে কেন্দ্রীয় যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক পদে বসেন। এখন তিনি একাধিক গাড়ি-বাড়ি, ফ্ল্যাট ও জমির মালিক।

সংগঠনের চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুযোগে ২০১২ সালে উপ-দপ্তর সম্পাদকের পদ পেয়ে যান আনিস। দপ্তর সম্পাদকের পদটি খালি থাকায় ছয় মাসের মধ্যে তাকে ওই পদ দেওয়া হয়।  

দুদকের মামলায় বলা হয়েছে, মুকসুদপুরের মেসার্স মা ফিলিং স্টেশন এবং মেসার্স আরাফিন এন্টারপ্রাইজের মালিক আনিস বিভিন্ন ‘অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কাজের’ মাধ্যমে ১২ কোটি ৮০ লাখ ৬০ হাজার ৯২০ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন।

এজাহারে বলা হয়, “আয়কর নথি, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ, গোপনসূত্র থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রকৃতপক্ষে কাজী আনিসুর রহমানের বৈধ আয়ের উল্লেখযোগ্য উৎস নেই।

“তিনি ক্যাসিনো ব্যবসাসহ অবৈধ পন্থায় অর্জিত অর্থ দ্বারা স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির মালিকানা অর্জন করেছেন; যা তার জ্ঞাত আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ মর্মে প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত তথ্য প্রমাণে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।”

মামলায় বলা হয়, কাজী আনিস তার ‘অবৈধ’ উপায়ে অর্জিত অর্থ দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে নামে-বেনামে একাধিক প্লট, বাড়ি ও ফ্ল্যাট কিনেছেন।

“ঢাকার ধানমণ্ডি, উত্তরা, যাত্রাবাড়ী, স্বামীবাগসহ বিভিন্ন জায়গায় স্থাবর সম্পদ অর্জন করাসহ দেশে-বিদেশে নামে-বেনামে শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন; যা মামলার তদন্তকালে আসামির অবৈধ উপায়ে অর্জিত সম্পদের তথ্য প্রমাণাদি সংগ্রহ সাপেক্ষে আমলে নেওয়া হবে।”

আনিসের স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলায় বলা হয়েছে, সুমি রহমান নিজের এবং তার স্বামী কাজী আনিসুর রহমানের ‘অবৈধ উপায়ে অর্জিত’ অর্থ দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে নামে-বেনামে একাধিক প্লট, বাড়ি ও ফ্ল্যাটের মালিক হয়েছেন।

“ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় কয়েক কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন, যা মামলার তদন্তকালে আসামির অবৈধ উপায়ে অর্জিত সম্পদের তথ্য প্রমাণাদি সংগ্রহ পাওয়া সাপেক্ষে আমলে নেওয়া হবে।”