দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় বিচারিক আদালত ৫০ লাখ টাকার অর্থদণ্ডের যে রায় দিয়েছিলেন, তাও স্থগিত করেছে আদালত।
বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আপিল গ্রহণ করে সোমবার বিচারপতি মো. শওকত হোসেনের একক বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দ মিজানুর রহমান, জয়নুল আবেদীন, মাহবুব উদ্দিন খোকন ও হারুনুর রশীদের স্ত্রী সৈয়দা আসিফা আশরাফি পাপিয়া। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
দুদক আইনজীবী পরে সাংবাদিকদের বলেন, “একবছর ৩ মাস সাজা খেটেছে- এই বিবেচনায় তাকে ছয় মাসের অন্তবর্তী জামিন দিয়েছে এবং অর্থদণ্ড স্থগিত করেছে। এছাড়া বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে তার আপিলটিও গ্রহণ করেছে আদালত।”
এই আদেশের বিরুদ্ধে শিগগিরই আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছে জানিয়ে খুরশীদ বলেন, আদেশের অনুলিপি পেলে মঙ্গলবার লিভ-টু-আপিল করা হবে। তা নাহলে জামিন স্থগিত চেয়ে চেম্বার আদালতে আবেদন করা হবে।
শুল্ক ফাঁকির মামলায় বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদকে গত ২১ অক্টোবর ৫ বছরের দণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠায় ঢাকার বিশেষ জজ শেখ নাজমুল আলম।
এ মামলার তিন আসামির মধ্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হারুনকে ৫ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানার টাকা না দিলে তাকে আরও ছয় মাসের সাজা খাটতে হবে।
আর গাড়ি ব্যবসায়ী ইশতিয়াক সাদেককে তিন বছর কারাদণ্ড এবং ৪০ লাখ টাকা জরিমানা করে আদালত। বাপ্পী ও সাদেককে রায়ে পলাতক দেখানো হয়।
এ রায়ের বিরুদ্ধে গত রোববার হাই কোর্টে আপিলের সঙ্গে জামিন আবেদন করেন হারুনুর রশীদ।
বিগত চার দলীয় জোট সরকারের সময় সংসদ সদস্য থাকা অবস্থায় শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানি করে তা বিক্রির অভিযোগে হারুনসহ ওই তিনজনের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ১৭ মার্চ এই মামলা করা হয় ঢাকার তেজগাঁও থানায়।
তদন্ত শেষে ওই বছরের ১৮ জুলাই তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন দুদকের সহকারী পরিচালক মোনায়েম হোসেন।
সেই অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে আদালত ২০০৭ সালের ২০ আগস্ট হারুনসহ তিন আসামির বিচার শুরু করে। ওই সময় তিনি গ্রেপ্তার হয়ে কারাভোগও করেন।
দুদকের পক্ষে এ মামলা পরিচালনা করেন রুহুল আমিন। আর আসামিপক্ষে ছিলেন আমিনুল গণি টিটো।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের এমপি হারুন একাদশ জাতীয় সংসদে বিএনপির সংসদীয় দলের নেতৃত্বে আছেন।
সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে তিনিই বলেছিলেন, দেড় বছরের বেশি সময় ধরে কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন জামিন পেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাবেন।