ক্রিকেটারদের সঙ্গে আলোচনায় প্রস্তুত: বিসিবি সভাপতি

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান বলেছেন, আলোচনার জন্য তারা প্রস্তুত হলেও ধর্মঘটী ক্রিকেটারদের সাড়া পাচ্ছেন না।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Oct 2019, 10:07 AM
Updated : 23 Oct 2019, 01:08 PM

জাতীয় দলের ভারত সফরের আগে ক্রিকেটারদের আকস্মিক ধর্মঘট নিয়ে ব্যাপক আলোচনার মধ্যে বুধবার দুপুরের পর গণভবনে গিয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন সংসদ সদস্য নাজমুল।

বুধবার দুপুরের পর তিনি যখন প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ঢোকেন তখন তা সঙ্গে বিসিবি পরিচালক ও ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশেন অব বাংলাদেশে (কোয়াব) সভাপতি নাইমুর রহমান দুর্জয়ও ছিলেন।

বিকাল ৩টায় গণভবন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় নাজমুল সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা খেলোয়াড়দের সব দাবি দাওয়া মেনে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছি। কিন্তু তাদের সঙ্গে যোগাযোগের পরেও ফোন ধরছে না।

“আমরা বলছি, সবগুলো দাবি মানার মতো, এটা কোনো সমস্যাই না। আসলেই শেষ। তারপরও আমরা যোগাযোগ করছি, তারা ফোন ধরছে না। ওরা কোনো যোগাযোগ করছে না। তাহলে করবটা কী বলেন?”

এদিকে সন্ধ্যায় সাকিব আল হাসানসহ ধর্মঘটী ক্রিকেটাররা গুলশানের একটি হোটেলে তাদের আইনজীবীকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে দাবি বাড়িয়ে ১৩ দফা তুলে বিসিবিকে চিঠি দেওয়ার কথা জানান।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়ে জানতে চাইলে বিসিবি সভাপতি বলেন, “উনি তো সবই জানেন। গত পরশুদিনও উনার সাথে ছিলাম। কাল সকালে মাশরাফি এসেছিল। এখন আমি উনাকে জাস্ট জানাতে আসলাম আপডেট।”

জাতীয় ক্রিকেট দলের ভারত সফরের আগে সোমবার মিরপুরে জাতীয় ক্রিকেট একাডেমি মাঠে প্রায় ৬০ জন ক্রিকেটারকে সঙ্গে নিয়ে পারিশ্রমিকসহ ১১ দাবিতে ধর্মঘটের ঘোষণা দেন জাতীয় দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।

পরদিন সংবাদ সম্মেলন করে ক্রিকেটারদের আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল; তিনি এটাও বলেন, এই ধর্মঘটের পেছনে চক্রান্ত রয়েছে এবং ক্রিকেটারদের কেউ কেউ এতে জড়িত।

বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পর আলোচনায় আগ্রহ দেখিয়ে তিনি বলেন, “আজকে আমরা আবার তাদের ডেকেছি। আমরা যেহেতু কন্টাক্ট করে পারছি না। সেহেতু আমাদের সিইও তাদের মিডিয়ার মাধ্যমে জানিয়েছে হোয়াট টু ডু। আমরা জানিয়েছি, তারা যেন আমাদের সাথে বসে যে কোনো সময়।”

আলোচনা কী নিয়ে হবে- জানতে চাইলে বিসিবি সভাপতি বলেন, “এখানে সমাধান তো দেওয়াই। আমি তো কালকেই বললাম, ওদের কোন দাবিটা আছে? এখানে এমন কোনো দাবি নেই, যেটা মানা যাবে না। দাবি নিয়ে আসলেই সাথে সাথে শেষ। ওদের আসতে হবে তো।”

দাবি বিসিবিকে না জানিয়ে ধর্মঘটের কর্মসূচি ডাকার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন নাজমুল। পাশাপাশি ভারত সফরে না গেলে বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য সমস্যার কথাও বলেন তিনি।

“ওরা কি এই জিনিসটা বোঝে না যে এই ট্যুরটায় গেলাম না, তাতে কী হবে? বাংলাদেশ যদি স্যাংশনে পড়ে। খেলা বন্ধ হয় এক বছরের জন্য তাতে খেলোয়াড়দের কী লাভ? জিনিসটা তো খেলোয়াড়দের আগে বুঝতে হবে।”

ধর্মঘটের পেছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে আবারও দাবি করেন বিসিবি সভাপতি।

“এরকম একটা গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টের আগে এই ধরনের সিদ্ধান্ত কেউ নিতে পারে। আমার ধারণা, বেশিরভাগ প্লেয়ারই হয়ত জানে না। এটার মধ্যে ডেফিনেটলি একটা ষড়যন্ত্র আছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

“কারও কাছে কিছু না বলে খেলা বন্ধ করবে কেন? এটা তো ক্রিকেটকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র। এটা তো হতে পারে না। যে কেউ বোঝার কথা। কোনো দাবি না দিয়ে আগে খেলা বন্ধ! এটা তো হতে পারে না। এটা পৃথিবীর কোথাও নেই। এটার মধ্যে নিশ্চয়ই কোনো একটা ব্যাপার আছে।”

তবে ক্রিকেটারদের সবাই এই ষড়যন্ত্রে জড়িত নয় বলে মনে করেন বিসিবি সভাপতি।

তিনি আরও বলেন, “আপনাদের কি মনে হয়, টাকার জন্য ওরা এটা করছে? প্রশ্নই ওঠে না। যে কোনো স্ট্যান্ডার্ডে বাংলাদেশে তারা যা পায়, অনেক বেশি পায়। কেউ বলতে পারবেন না প্লেয়াররা কম পাচ্ছে।

“শুধু টাকার কারণে তারা এমনটি করছে না। এখানে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে।”

পুরনো খবর