সমাপনী পরীক্ষা বর্জনের হুমকি প্রাথমিক শিক্ষকদের

বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবি বাস্তবায়ন না হলে প্রাথমিকের সমাপনীসহ সব পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষকরা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Oct 2019, 08:05 AM
Updated : 9 Feb 2020, 11:53 AM

বুধবার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পূর্বঘোষিত সমাবেশে পুলিশের বাধা পেয়ে দোয়েল চত্বরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ থেকে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্যপরিষদ এ ঘোষণা দেয়।

সংগঠনটির আহ্বায়ক আনিসুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সরকারি প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের জন্য দশম গ্রেড এবং সহকারী শিক্ষকদের জন্য ১১তম গ্রেডের ঘোষণা ২০১৭ সালে দেওয়া হয়েছিল। এখনো সেই ঘোষণা বাস্তবায়ন হয়নি।

তিনি বলেন, ১৩ নভেম্বরের মধ্যে বেতনের বৈষম্য নিরসন না করা হলে ১৪ নভেম্বর থেকে প্রতিটি কর্মবিরতির পাশাপাশি ১৭ নভেম্বরের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা ও বার্ষিক পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

এর আগে পূর্বঘোষিত সমাবেশ করতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা কয়েক হাজার শিক্ষক শহীদ মিনার এলাকায় জড়ো হন। কিন্তু পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করে সরিয়ে দেয়।

পরে তারা দোয়েল চত্বরে গিয়ে সমাবেশ করে কর্মসূচি ঘোষণা করে সমাবেশ শেষ করেন। এরপরও অনেক শিক্ষককে শহীদ মিনারে অবস্থান নিতে দেখা যায়।

এবিষয়ে জানতে চাইলে আনিসুর বলেন, দোয়েল চত্বরে সমাবেশ করলেও পুলিশ তাদের মাইক ব্যবহার করতে দেয়নি। এ কারণে কর্মসূচি ঘোষণার খবর অনেকে জানতে পারেনি।

আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানান, এখন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা ১৪তম গ্রেডে এবং প্রশিক্ষণহীন শিক্ষকরা ১৫তম গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন। আর প্রধান শিক্ষক পাচ্ছেন ১১তম গ্রেডের বেতন। শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে ২০১৭ সালের সহকারী শিক্ষকদের জন্য ১১তম গ্রেড এবং প্রধান শিক্ষকের জন্য ১০তম গ্রেড সংস্কার করার ঘোষণা দিয়েছিল সরকার। দীর্ঘ দুই বছরেও সেই দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ায় এখন আবার আন্দোলনে নেমেছেন তারা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী ২০১৪ সালের ৯ মার্চ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের পদকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করা বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

কিন্তু পরে মন্ত্রণালয় প্রশিক্ষিত প্রধান শিক্ষকদের জন্য ১১ ও অপ্রশিক্ষিত প্রধান শিক্ষকদের জন্য ১২তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ করে। এ নিয়ে প্রধান শিক্ষকদের বিভিন্ন সংগঠন আন্দোলন করে আসছিল।

বিষয়টি নিয়ে তারা আদালতের দ্বারস্থও হন। গত ফেব্রুয়ারিতে সরকারি প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেডে বেতন দিতে নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট, যা ২০১৪ সালের ৯ মার্চ থেকে আদেশ কার্যকর করতে বলা হয়েছে। কিন্তু সে আদেশ এখনও বাস্তবায়ন করা হয়নি।

প্রাথমিক সহকারি শিক্ষকদের একাদশ গ্রেড ও প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেডে বেতন নির্ধারণের দাবিতে ‘প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্যপরিষদের’ ডাকে এর আগে ১৪ অক্টোবর থেকে ১৭ অক্টোবর কর্মবিরতি পালন করেন শিক্ষকরা।