রোহিঙ্গাদের ফেরাতে সহায়তার প্রতিশ্রুতি ইইউর

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশকে আর্থিক এবং রাজনৈতিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলে আশ্বস্ত করেছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Oct 2019, 06:39 PM
Updated : 21 Oct 2019, 06:39 PM
সোমবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং বাংলাদেশের নবম যৌথ কমিশন সভায় এ প্রতিশ্রুতি আসে।

ঢাকার শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে কো চেয়ারের দায়িত্ব পালন করেন ব্যাংক ও আর্থিক বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষে কো- চেয়ারের দায়িত্ব পালন করেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক পওলা পাম্পালোনি।

বৈঠকের পর পাম্পালোনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আমরা মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বিতাড়িত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে নিরাপদে, স্বেচ্ছায় এবং টেকসই প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশকে আর্থিক ও রাজনৈতিক সহযোগিতা দেব।”

তবে এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া স্বেচ্ছায় হওয়া উচিৎ বলে ইইউ মনে করে বলেও জানান তিনি।

মিয়ানমারে নিপীড়ণের শিকার ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আছে। তাদের ফেরত নিতে মিয়ানমার বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও রোহিঙ্গাদের আশঙ্কা না কাটায় তারা এখনই ফিরতে চায় না।

রাখাইনে রোহিঙ্গাদের নিরাপদে বসবাসের শর্ত পূরণে মিয়ানমারকে বাধ্য করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে বাংলাদেশ।

এক প্রশ্নের জবাবে ইইউ প্রতিনিধি পাম্পালোনি বলেন, বাংলাদেশ ২০২৪ সালে চুড়ান্তভাবে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হলেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশকে বিশেষ করে পোশাক শিল্পে জিএসপি প্লাস সুবিধা দেবে।

তবে এজন্য বাংলাদেশকে শ্রমিক স্বার্থ উন্নয়নে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) কনভেনশন বাস্তবায়ন নিশ্চিত করাসহ কিছু শর্ত পালন করতে হবে।

পোশাক কারখানায় এখন শ্রমিকদের জন্য আগের চেয়ে বেশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হলেও উন্নতির আরও সুযোগ রয়েছে বলে মন্তব্য করেন পাম্পালোনি।

সংবাদ সম্মেলনে আসাদুল ইসলাম বলেন, ২০০১ সালে শুরু হওয়া যৌথ কমিশনের এই বৈঠক প্রতি দুই বছর অন্তর অনুষ্ঠিত হয়। একবার ব্রাসেলসে, পরের বার ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। এবারের যৌথ বৈঠকে দুপক্ষের প্রায় ৪০ জন প্রতিনিধি অংশ নেন।

তিনি বলেন, এই বৈঠকে বাংলাদেশের  শাসনব্যবস্থা, গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মানবাধিকার, অর্থনীতি, বাণিজ্যিক সহযোগিতা, উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার পর জিএসপি সুবিধা পাওয়া, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা এবং চলমান টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় সম্পদ যোগানের বিষয়সহ মোট ১১টি বিষয়ের উপর আলোচনা হয়েছে।

রোহিঙ্গা বিষয়ে ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ’ সমর্থন পাওয়ার কথা জানিয়ে এই সচিব বলেন, “বৈঠকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিজের দেশ মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে তাদের আর্থিক ও রাজনৈতিক সহযোগিতার বিষয়ে তারা আমাদের নিশ্চয়তা দিয়েছেন।”