কর্তৃপক্ষের ‘ভুলে’ বেতনহীন হাজারো শিক্ষক রাজপথে

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমপিওভুক্ত শিক্ষক হিসেবে যোগদান করে নয় মাস ধরে বেতন না পেয়ে ঢাকায় এক কর্মসূচি থেকে সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন হাজারো শিক্ষক। 

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Oct 2019, 11:36 AM
Updated : 21 Oct 2019, 11:36 AM

সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাব চত্বরে মানববন্ধন কর্মসূচিতে সারাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা এই শিক্ষকরা তাদের সমস্যার জন্য বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)  এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরকে দায়ী করেছেন।

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) কর্তৃক সুপারিশকৃত এই শিক্ষকরা তাদের সঠিক পদে যোগদান এবং যথাযথ এমপিওভুক্তির দাবি তুলেছেন।

এই শিক্ষকরা বলছেন, এক পদের জায়গায় অন্য পদে রিকুইজিশন,একটিমাত্র পদের জন্য একাধিক প্রার্থী রিকুইজিশন, নারী কোটায় ভুল রিকুইজিশনে পুরুষ প্রার্থীকে সুপারিশ করায় সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন তারা।

মানববন্ধনে নানা স্লোগান সম্বলিত প্লাকার্ড বহন করেন এই শিক্ষকরা; তার মধ্যে ছিল- ‘কী আজব দেশটারে ভাই, কারও বেতন আছে কারও নাই’, ‘নিয়োগ আছে, বেতন নাই, ৯ মাস পর মাউশি বলে চাকরি নাই’।

কর্মসূচি আহ্বানকারী ‘সুপারিশপ্রাপ্ত বেসরকারি শিক্ষক পরিষদ’র আহ্বায়ক শাহাদৎ হোসেন বলেন, “এদেশে একমাত্র প্রধানমন্ত্রী ছাড়া কোনো নেতৃস্থানীয়রাই তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছে না।

“আমি মনে করি, যারা দায়িত্ব নিয়ে বসে আছেন, তারা যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে না পারেন, তাহলে আপনারা পদত্যাগ করুন, আপনাদের চেয়ে যোগ্য লোক আছে।”

কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া খুলনার দাকোপ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবসৃষ্ট পদে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক শেখ সেলিম রেজা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের সুপারিশ করা হয়েছে এমপিওভুক্ত হিসেবে, কিন্তু শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পরেও নানান বিশৃঙ্খলার কারণে আমরা গত নয় মাস যাবত বেতন পাচ্ছি না, এটি আমাদের জন্য খুবই দুঃখের।”

শাহাদাৎ বলেন, “আমরা জাতির মেধা তৈরির কারিগরেরা গত ৯-১০ মাস ধরে বঞ্চিত হয়ে আসছি সকল সুযোগ-সুবিধা থেকে। আমরা এক রকম বেকার অবস্থায় জীবনযাপন করছি। হাজার হাজার শিক্ষক চরম হতাশায় দিন কাটাচ্ছি।”

দাবি পূরণে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

“আমরা এনটিআরসির চেয়ারম্যানের সাথে সাক্ষাৎ করব, তার সাথে আলোচনা সাপেক্ষে কর্তৃপক্ষকে ১৫ দিন সময় দেব। এরপর তারা যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে আমরা কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করব।”

গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর এনটিআরসিএ বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় ৩৯ হাজার ৫৩৫টি পদে শিক্ষক নিয়োগে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে। প্রায় ৪০ হাজার শূন্য পদে (এমপিও এবং নন এমপিও পদে) বিপরীতে নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে গত ২৪ জানুয়ারি নিয়োগের সুপারিশ করে।

কিন্তু রিকুইজশনের ভুলের কারণে এমপিওভুক্তির জন্য সুপারিশকৃতদের মধ্যেও ৩ হাজার শিক্ষক বেতনের সরকারি অংশ পাচ্ছেন না বলে আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানান। তারা বলেন, এছাড়া প্রায় ৫ হাজার শিক্ষক যোগদানই করতে পারেননি।

এই শিক্ষকরা তাদের সমস্যার জন্য এনটিআরসিএ এবং মাউশির সমন্বয়হীনতাকে দায়ী করছেন।