ঢাবিতে ‘জোবাইক’ নিয়ে একজনের নাক ফাটাল ছাত্রলীগকর্মীরা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু হওয়া মোবাইল অ্যাপভিত্তিক ‘জোবাইক’ সেবার একটি বাইসাইকেল হলের কক্ষে নিতে মানা করায় এক ছাত্রকে মেরে নাক ফাটিয়ে দিয়েছেন ছাত্রলীগের কর্মীরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Oct 2019, 06:10 PM
Updated : 20 Oct 2019, 06:16 PM

আহত নিলয় কুমার বিশ্বাস গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। জগন্নাথ হলের এই ছাত্রের অভিযোগ তার হলেরই তিন ছাত্রলীগকর্মী বিরুদ্ধে।

তিনি বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের অনুসারী হিসেবে পরিচিত হিসাববিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সুস্ময় দাস আরও দুইজনকে নিয়ে রোববার দুপুরে তার ওপর হামলা করেন।

মারধরে নিলয়ের নাক ও মুখ দিয়ে রক্ত ঝরে এবং ডান চোখে আঘাত পান তিনি। পরে প্রক্টরিয়াল টিমের সহযোগিতায় নিলয়কে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যান তার বন্ধুরা। চিকিৎসকের পরামর্শে সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসা নিয়ে পরে আবার বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে ফিরে আসেন নিলয়।

ঘটনা সম্পর্কে নিলয় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, হলের ক্যান্টিনে দুপুরে খাওয়ার পর নিজের বাইসাইকেল নিয়ে লিফটে করে রুমের দিকে যাচ্ছিলেন তিনি।

“এই সময় সৌরভ বিশ্বাস নামে হলের একজন ছাত্র জোবাইক নিয়ে লিফটে করে যাচ্ছিল। জোবাইকটি রুমে নেওয়ার কোনো নিয়ম না থাকায় আমি তাকে অনুরোধ করি বাইকটি নিচে রেখে যাওয়ার জন্য। একপর্যায়ে সৌরভের ‘হলের বড়ভাই’ সুস্ময় দাসসহ কয়েকজন তাকে সাইকেলসহ লিফটে উঠিয়ে দিয়ে আমাকে মারধর শুরু করে।”

ছাত্রলীগকর্মী সুস্ময় দাসের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করেছেন নিলয়

এই ঘটনার প্রতিকার চেয়ে হল প্রাধ্যক্ষকে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নিলয়।

তার ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে ডাকসুর ছাত্র পরিবহন সম্পাদক শামস ঈ নোমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জোবাইক রুম পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার বিষয় নয়। নিয়ম অনুযায়ী জোবাইক ব্যবহারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আমরা অনুরোধ জানিয়েছি।"

রুমে কেন এই বাইসাইকেল নিচ্ছিলেন সে বিষয়ে জানতে চাইলে সৌরভ সাংবাদিকদের বলেন, “আমার মোবাইল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এবং আমি বাইকটি লক করতে না পারছিলাম না বলে এটি রুমের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলাম।”

হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মিহির লাল সাহা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে গিয়ে নিলয়কে দেখে আসেন। এই হামলাকে ‘অমানবিক আচরণ’ আখ্যায়িত করে দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

হল সংসদের ভিপি ও হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক উৎপল বিশ্বাসও মেডিকেল সেন্টারে নিলয়ের খোঁজ নিতে আসেন। হল সংসদের পক্ষ থেকে এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি বিষয়টি শুনেছি। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

তবে এ বিষয়ে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনজিতের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর তার মোবাইল নম্বরে ফোন করা হলে তিনি কেটে দেন। পরে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।