নোয়াবের আবেদনে ওয়েজ বোর্ড নিয়ে হাই কোর্টের রুল

সংবাদপত্র ও বার্তা সংস্থার কর্মীদের নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণ করে প্রকাশিত নবম ওয়েজ বোর্ডের গেজেট কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Oct 2019, 12:55 PM
Updated : 15 Oct 2019, 12:55 PM

এ সংক্রান্ত বিচারাধীন একটি রিটের সম্পূরক আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাই কোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ রুল জারি করে।

সংবাদপত্র ও বার্তা সংস্থার কর্মীদের নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণ করে গত ১২ সেপ্টেম্বর ওয়েজ বোর্ডের গেজেট প্রকাশ করে সরকার। তা চ্যালেঞ্জ করেই সোমবার এ সম্পূরক অবেদন করেন নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (নোয়াব) সভাপতি দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান।

চার সপ্তাহের মধ্যে নবম ওয়েজবোর্ড সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার সভাপতি, শ্রম সচিব, তথ্য সচিব ও ওয়েজ বোর্ডের চেয়ারম্যানকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. ইউসুফ আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ।

ইউসুফ আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওয়েজ বোর্ড সংক্রান্ত আগের যে রিটটি বিচারাধীন সেটির সম্পূরক হিসেবে সোমবার এ অবেদনটি করা হয়েছে।

“এর আগে নবম ওয়েজ বোর্ডের উপর স্থিতাবস্থা নিয়েছিলাম। কিন্তু সরকার আপিল বিভাগকে ‘মিসলিড’ করে হাই কোর্টের অদেশটিতে স্থগিতাদেশ নিল। সরকার আপিল বিভাগে বলেছে, শ্রমিবিধির ১২৮ বিধি নিম্নতম মজুরির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, সংবাদপত্রের মজুরি বোর্ডের ক্ষেত্রে অ্যাপ্লিকেবল না। অথচ শ্রম আইনের ৩৪৪ (১) ধারায় আছে যে, এই আইনের অধীনে গঠিত যে কোনো বোর্ডেরই (তা যে নামেই অভিহিত হোক না কেন) কার্যধারা শ্রমবিধি দিয়ে নির্ধারিত হবে।

“এ ছাড়া আইনের ৩৫১ (২) (ঘ) ধারা অনুযায়ী সরকার শ্রমবিধির ১২৮ বিধি প্রণয়ন করে বোর্ডের কার্যধারা নির্ধারণ করে দিয়েছে। সুতরাং ১২৮ বিধি সম্পূর্ণ অ্যাপ্লিকেবল।”

এ আইনজীবী বলেন, “যাই হোক সরকার যেহেতু গেজেট প্রকাশ করে ফেলেছে তাই এ সম্পূরক আবেদনটি করা ছাড়া আমাদের কোনো বিকল্প ছিল না। আজ আদালত গেজেটটির বৈধতা প্রশ্নে রুল জারি করেছেন। তবে এই রুল জারির ফলে নবম ওয়েজ বোর্ডের গেজেটর কার্যকারিতায় আপাতত কোনো বাঁধা নেই।”

এর আগে নবম ওয়েজ বোর্ডের নতুন বেতন কাঠামোর সুপারিশ চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করে নোয়াব।

সে রিটের শুনানি নিয়ে গত ৬ অগাস্ট হাই কোর্ট রুল জারি করে এবং নতুন বেতন কাঠামোর সুপারিশ বাস্তবায়নের গেজেট প্রকাশের ওপর দুই মাসের স্থিতাবস্থার আদেশ দেয়।

হাই কোর্টের এ আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। সে আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২০ অগাস্ট আপিল বিভাগ হাই কোর্টের আদেশটি ৮ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে দেয়।

এই সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে হাই কোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলে সর্বোচ্চ আদালত।

এরপর আপিল বিভাগের আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে গত ৯ সেপ্টেম্বর চেম্বার আদলতে আবেদন করে নোয়াব। চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী তাদের আবেদন আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে আগামী ২০ অক্টোবর শুনানির জন্য রাখেন।

ওই দিন নবম ওয়েজ বোর্ডের প্রকাশিত গেজেট স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে বলেও জানান আইনজীবী মো. ইউসুফ আলী।