সহজ জীবন-উন্নত চিন্তা, এটাই বাবার শিক্ষা: প্রধানমন্ত্রী

সহজ-সরল জীবনযাপন আর উন্নত চিন্তা করা- জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছ থেকে এমন শিক্ষা পাওয়ার কথা স্মরণ করে তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিশুদেরকেও তা অনুসরণের পরামর্শ দিয়েছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Oct 2019, 07:48 AM
Updated : 9 Oct 2019, 08:35 AM

সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক ও দুর্নীতির কুপ্রভাব যেন শিশুদের জীবনে না পড়ে সেভাবে দেশকে গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

বুধবার বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ -২০১৯ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে

তিনি বলেন, “আমরা চাই আমাদের শিশুদের মন-মানসিকতা আরও উন্নত হোক। তারা আরও সুন্দরভাবে গড়ে উঠবে।

“সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ মাদক ও দুর্নীতি এসব কুপ্রভাব থেকে আমাদের শিশুদের মুক্ত জীবন, সুন্দর উন্নত জীবন, উন্নত ভবিষ্যৎ গড়ে উঠবে, সেটাই হচ্ছে আমাদের লক্ষ্য। সেভাবেই আমরা দেশকে গড়ে তুলতে চাচ্ছি।”

তিনি বলেন, “আজকের শিশু আগামী দিনের কর্ণধার। আজকের শিশু তো গড়ে তুলবে আগামী দিনকে। আমি চাই আমাদের শিশুরা শিক্ষা-দীক্ষায়, সংস্কৃতি চর্চা, খেলাধুলা সর্বক্ষেত্রে তারা উন্নত হোক, অগ্রগামী হোক এবং দেশকে তারা এগিয়ে নিয়ে যাবে ভবিষ্যতে। ভবিষ্যৎ কর্ণধার হিসেবে নিজেদেরকে গড়ে তুলবে সেটাই আমরা চাই। বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের শিশুরা যেন চলতে পারে সেভাবেই আমরা শিশুদের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে চাই।”

শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে ভালোবাসা ছিল তা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। 

শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তিনি শিশুদের যেমন অত্যন্ত ভালোবাসতেন তেমনি শিশুকাল থেকে তিনি শিখেছিলেন মানুষকে ভালোবাসা। গোপালগঞ্জের যে স্কুলে তিনি পড়তেন পায়ে, হেঁটে শিশুদের স্কুলে যেতে হত, বর্ষায় ভিজতে হত। তিনি তার নিজের ছাতাটা পর্যন্ত দিয়ে দিতেন গরীব কাউকে। কাপড়-চোপড় দিয়ে দিতেন অথবা শিশুদের নিয়ে এসে নিজের খাবার ভাগ করে খেতেন।

“একটা শিশু সংগঠনও তিনি করেছিলেন। সেখানে তার একজন শিক্ষক সংগঠনটা গড়ে তোলেন। মুষ্টিভিক্ষা করে খাদ্য যোগাড় করে গরীব শিশুদেরকে সহযোগিতা করা হত। শিশুকাল থেকেই মানুষকে ভালোবাসা, মানুষকে সহযোগিতা করা, সাহায্য করা সেই শিক্ষাটা তিনি গ্রহণ করেছিলেন এবং এভাবেই তিনি নিজেকে গড়ে তুলেছিলেন, যেন বাংলাদেশের মানুষ একটু সুন্দর জীবন পায়।”

বাবার দেওয়া শিক্ষার কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদেরকেও শিখিয়েছিলেন যে, জীবন-যাপন করতে হবে খুব সহজ সরলভাবে। কিন্তু চিন্তা করতে হবে খুব উন্নত। একথা ছোটবেলা থেকেই তিনি আমাদের বুঝিয়েছেন, শিখিয়েছেন। আমরা চাই আমাদের ছেলেমেয়েরাও চিন্তায-চেতনায় নিজেদেরকে বড় করবে, দেশকে ভালবাসবে, মানুষকে ভালবাসবে। শুধু চাকচিক্য দিয়ে নয়, সাদাসিধে জীবনযাপন করবে।”

পঁচাত্তরের ১৫ অগাস্ট জাতির জাতির পিতাকে হত্যার পর বাংলাদেশ এগোতে পারেনি মন্তব্য করে তিনি বলেন, “খুব স্বাভাবিক। কারণ যারা দেশের স্বাধীনতা চায়নি তাদের হাতে যখন ক্ষমতা তখন তারা কেন বাংলাদেশকে এগোতে দেবে? আমরা যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলাম তখন থেকেই দেশের অগ্রযাত্রা শুরু।”

দেশের উন্নয়নে নেওয়া সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। 

“আমরা এখন স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণ করেছি। আমরা নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট করছি। কর্ণফুলী নদীর নিচ দিয়ে একটি টানেল করছি। পদ্মা সেতু হচ্ছে। মেট্রোরেল হচ্ছে। আজকে বাংলাদেশ বিশ্বে তার হারানো সম্মান ফিরে পেয়েছে। এই সম্মান আমাদের ধরে রাখতে হবে।”

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, সচিব কামরুন নাহার, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান লাকী ইনামসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।