‘অসুস্থ’ সম্রাট কারাগার থেকে হাসপাতালে

ক্যাসিনোকাণ্ডে আলোচিত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ‘অসুস্থ’ বোধ করায় তাকে কারাগার থেকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Oct 2019, 04:00 AM
Updated : 8 Oct 2019, 10:56 AM

বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) আইনে ভ্রাম্যমাণ আদালত ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়ার পর গত রোববার সম্রাটকে রাখা হয়েছিল কেরানীগঞ্জে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে।  

সেখান থেকে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তাকে প্রথামে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে সেখান থেকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়।

ঢাকা মেডিকেলে দায়িত্বরত র‌্যাব সদস্য মোতালেব হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “উনি বুকের ব্যথা অনুভব করার কথা বলায় কারাগার থেকে এখানে নিয়ে আসা হয়। এখানে ইসিজি করার পর ডাক্তারের পরামর্শে ৮টার দিকে হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়া হয়।”

হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক আফজালুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “উনার (সম্রাট) ভাল্ব আগেই রিপ্লেস করা হয়েছে। সেটা ভাল আছে। সকালে বুকের ব্যথা নিয়ে এখানে এসেছেন। এখন অবস্থা স্থিতিশীল।”

চিকিৎসকরা জানান, ১৯৯৮ সালে সম্রাটের হৃদপিণ্ডের একটি ভাল্ব রিপ্লেস করা হয়েছিল। তবে হাসপাতালে আনার পর তার হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক পাওয়া গেছে। তাকে সিসিইউতে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

বুধবার সকাল পর্যন্ত এই পর্যবেক্ষণ চলবে জানিয়ে হাসপাতালের পরিচালক দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, “যে সব পরীক্ষা করা হয়েছে সেখানে ফল মোটামুটি ভালো। তারপরও তাকে ২৪ ঘণ্টা অবজারভেশনে রাখা হবে। এ সময় আরও কিছু পরীক্ষা করা হবে। সাত সদস্যের মেডিকেল টিম গঠন করে তার চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।”

গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার মতিঝিলের ক্লাবপাড়ায় র‌্যাবের অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো চলার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা সম্রাটের নাম ঘুরে ফিরে আসছিল। শনিবার গভীর রাতে সম্রাট ও তার সহযোগী এনামুল হক আরমানকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

পরে সম্রাটকে সঙ্গে নিয়ে কাকরাইলের ভূইয়া ট্রেড সেন্টারে তার কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়্। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অভিযান শেষে গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল, ১১৬০টি ইয়াবা, ১৯ বোতল বিদেশি মদ, দুটি ক্যাঙ্গারুর চামড়া এবং ‘নির্যাতন করার’ বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম পাওয়ার কথা জানায় র‍্যাব।

ক্যাঙ্গারুর চামড়া পাওয়ার কারণে সম্রাটকে তাৎক্ষণিকভাবে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) আইনে তাৎক্ষণিকভাবে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেদিনই তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় কেরানীগঞ্জের কারাগারে।    

সোমবার রমনা থানায় সম্রাটের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা করে র‌্যাব। তাকে দুই মামলায় ১০ দিন করে মোট ২০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য ঢাকার মহানগহর হাকিম আদালতে আবেদন করে রমনা থানা পুলিশ।

বুধবার রিমান্ড শুনানির জন্য সম্রাটকে আদতালতে তোলার কথা রয়েছে। তার আগেই অসুস্থতার কারণে সম্রাটকে হাসপাতালে নেওয়া হল।