এনআইডি: প্রবাসীদের জন্য অনলাইন সেবা অক্টোবরেই

প্রবাসীদের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা সহজতর করতে অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে অনলাইন সেবা চালু করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Oct 2019, 05:14 PM
Updated : 6 Oct 2019, 05:15 PM

ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম রোববার এ তথ্য জানান।

নতুন এই সেবা চালু হলে ভোটার হতে প্রয়োজনীয় সব তথ্য দিয়ে অনলাইনে আবেদন করে পরে দেশে এসে শুধু আঙুলের ছাপ দিয়েই এনআইডি সংগ্রহ করতে পারবেন প্রবাসীরা।

সিঙ্গাপুরের বাংলাদেশি প্রবাসীদের জন্য সেখানে নিবন্ধন পদ্ধতি চালুর প্রক্রিয়া বিলম্বের মধ্যেই অনলাইন সেবাটি চালু করার উদ্যোগ নিচ্ছে ইসি।

সাইদুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশি প্রবাসীদের নিবন্ধনের বিষয়ে সেখানকার সরকারের চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় আমরা রয়েছি।

“কিন্তু তাদেরকে অনলাইন সেবা দেওয়ার জন্যে ১৫ অক্টোবরের দিকে কার্যক্রমটি উদ্বোধন করা হবে।”

ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনলাইন সেবা উদ্বোধন করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “এখানে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ পুরো কমিশন, ইসি সচিবালয় ও এনআইডি উইং প্রধান অবস্থান করবেন।

“আর সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ দূতাবাসের শীর্ষ কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্টরা থাকবেন। দুই পক্ষের ভিডিও কনফারেন্সে এ কার্যক্রম চালু হবে।”

বাংলাদেশি প্রবাসীরা অনলাইনে ভোটার তথ্য ফরম পূরণ করে আবেদন করলে সেসব তথ্য যাচাই করে ‘যাবতীয় কাজ প্রস্তুত রাখা হবে’ বলে জানান সাইদুল ইসলাম।

“দেশে ফেরার পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি শুধু আঙুলের ছাপ দিয়েই জাতীয় পরিচয়পত্র নিতে পারবেন,” বলেন তিনি। 

অনুমোদন নিয়ে পরে সিঙ্গাপুরে নিবন্ধন কাজ চালু হলে সেখানেই বায়োমেট্রিকসহ সব সেবা দেওয়া সম্ভব হবে বলে জানান ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক।

কেন্দ্রীয় ও উপজেলার সার্ভারের নিরাপত্তা জোরদারে নতুন করে কড়াকড়ি আরোপ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

সাইদুল ইসলাম বলেন, এরই মধ্যে এনআইডি উইংয়ে আইডিইএ প্রকল্পের সবাইকে অফিসে প্রবেশ ও বেরোতে আঙুলের ছাপ দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

“নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অফিসে প্রবেশ করেছে কি না, অনৈতিক কোনো কাজে সম্পৃক্ত হচ্ছে কি না এবং অনুমোদিত ব্যক্তিরা সুরক্ষিত এলাকায় যাচ্ছে কি না- তা কঠোরভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে। এজন্যে রোববার থেকে প্রকল্পের লোকজনদের অফিসে প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় ফিঙ্গার প্রিন্ট পদ্ধতি চালু করেছি।”

তিনি বলেন, নির্বাচন ভবন ও নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ভবনে ভোটারদের ডেটাবেইজ, পার্সোনালাইজেশন সেন্টার, এনআইডি সার্ভার ও সেবা কাজ চলমান রয়েছে। ভবনের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিটি ফ্লোরে বিশেষ যন্ত্র ও সিসি ক্যামেরা থাকবে।

নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আগামীতে ‘ফেস রিকগনিশন মেশিন’ স্থাপনের উদ্যোগও নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

“আগামী ছয় মাসের মধ্যে ইসিতে ব্যক্তির চেহারা শনাক্তকরণ যন্ত্র বসানো হবে। এ প্রস্তাব কমিশনে রাখব। অনুমোদন পেলেই কার্যকর হবে।”

ইসি কর্মকর্তারা জানান, ব্যক্তির চেহারা শনাক্ত করার এই যন্ত্র দিয়ে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তা ও অনুমোদিত ব্যক্তিদের চেহারা চিহ্নিত করা হবে।

সঠিক ব্যক্তি হলে মুখমণ্ডলজুড়ে বর্গাকৃতির সবুজ রেখা জ্বলে উঠবে। আর ব্যক্তি বহিরাগত হলে জ্বলবে লাল রঙের রেখা। এর মাধ্যমে সেবাগ্রহীতাদের কর্মকাণ্ডও নজরদারিতে থাকবে। ইটিআই ভবন ও নির্বাচন ভবনের আশপাশেও তা কার্যকর থাকবে।

বর্তমানে জাতীয় পরিচয়ের সার্ভার স্টেশন সংস্কারের কাজ চলছে। বর্তমান সার্ভারের ধারণ ক্ষমতা ৫০ টেরাবাইট। এর মধ্যে ১০ কোটি ৪২ লাখের বেশি ভোটারের তথ্য ধারণ করতে ব্যয় হয়েছে ৪৫ টেরাবাইট। যে কারণে দীর্ঘদিন ধরে সার্ভার স্বাভাবিকভাবে কাজ করছিল না। এ সমস্যা কাটানোর জন্য আরও ১০০ টেরাবাইট ধারণ ক্ষমতার সার্ভার বসানোর কাজ শুরু করেছে ইসি।

এনআইডি উইং কর্মকর্তারা বলেন, সার্ভারের মন্থরগতির কারণে সেবাগ্রহীতাদের ভোগান্তি সইতে হচ্ছে। নতুন সার্ভার চালু হওয়ার সেই সমস্যা আর থাকবে না।