সম্রাট ও আরমানকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৬ মাস করে সাজা

কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ও সহ-সভাপতি এনামুল হক আরমানকে ছয় মাস করে কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Oct 2019, 01:11 PM
Updated : 6 Oct 2019, 03:45 PM

এর মধ্যে সম্রাটের সাজা হয়েছে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) আইনে, তার কাকরাইলের অফিসে দুটি ক্যাঙ্গারুর চামড়া পাওয়ার কারণে।

আর কুমিল্লায় গ্রেপ্তারের সময় আরমান ‘মদ্যপ’ থাকায় তাকে সেখানেই ভ্যাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে র‌্যাবের নির্বাহী হাকিম সারওয়ার আলম জানিয়েছেন।

ঢাকার মতিঝিলের ক্লাবপাড়ায় গত ১৮ সেপ্টেম্বর র‌্যাবের অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো পাওয়ার পর থেকেই আলোচনায় ছিলেন যুবলীগের এ দুই নেতা।

মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া চক্রের ক্যাসিনো সম্রাট চালাতেন এবং মতিঝিল ক্লাবপাড়ায় অন্য ক্যাসিনোগুলো থেকেও প্রতিদিন নির্দিষ্ট হারে চাঁদা তার কাছে যেত বলে গণমাধ্যমে খবর আসে।

সম্রাটের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত যুবলীগ নেতা আরমানও দীর্ঘদিন ধরে ক্যাসিনোর কারবারে জড়িত বলে অভিযোগ ওঠে।

দুই সপ্তাহ ধরে নানা গুঞ্জনের পর শনিবার গভীর রাতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানার আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জশ্রীপুর গ্রামের একটি বাড়ি থেকে সম্রাট ও আরমানকে র‌্যাব গ্রেপ্তার করে। পরে রোববার দুপুর থেকে তাদের অফিস ও বাসায় কয়েক ঘণ্টা ধরে র‌্যাবের অভিযান চলে।

কাকরাইলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের কার্যালয়ে অভিযান শেষে র‌্যাব জানায়, গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল, ১১৬০টি ইয়াবা, ১৯ বোতল বিদেশি মদ, দুটি ক্যাঙ্গারুর চামড়া পেয়েছেন তারা।

এছাড়া সেখানে দুটি বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ও দুটি লাঠি পাওয়া গেছে, সেগুলো নির্যাতন করার কাজে ব্যবহার করা হত বলে র‌্যাব কর্মকর্তাদের ধারণা।

অভিযানের নেতৃত্বে থাকা র‌্যাবের নির্বাহী মেজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম বলেন, সম্রাটের বিরুদ্ধে ‘তিন ধরনের অপরাধের আলামত’ পেয়েছেন তারা। এর একটি বন্যপ্রাণী আইনে, বাকি দুটি মাদক ও অস্ত্র আইনে।

এর মধ্যে ক্যাঙ্গারুর চামড়া পাওয়ার কারণে সম্রাটকে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) আইনে তাৎক্ষণিকভাবে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে সেই মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

কাকরাইলে অভিযান শেষে যুবলীগ নেতা সম্রাটকে নিয়ে যাওয়া হয় কারাগারে

মাদক ও অস্ত্র পাওয়ায় সম্রাটের বিরুদ্ধে আরও দুটো মামলা করা হবে বলে নির্বাহী মেজিস্ট্রেট জানান।

তিনি বলেন, কুমিল্লায় অভিযানের সময় যুবলীগ নেতা আরমানকে মদ্যপ অবস্থায় পাওয়া যায়। এ কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাৎক্ষণিকভাবে তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠায়।

একই সময়ে শান্তিনগরে শেলটেক টাওয়ারের পঞ্চম তলায় এবং মহখালী ডিওএইচএসের ২৯ নম্বর সড়কে সম্রাটের দুটি বাসায় এবং মিরপুর দুই নম্বর সেকশনে অভিযান চালায় র‌্যাব।

আরমানের বাসায় বিভিন্ন ব্যাংকের ১২টি চেকবই এবং সই করা ২২টি খালি স্ট্যাম্প পেপার পাওয়া গেছে জানিয়ে র‌্যাব-৪ এর অ্যাডজুটেন্ট জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম সজল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আরমানের বাসায় কাউকে পাওয়া যায়নি। তালা ভেঙ্গে ঢুকতে হয়েছে। আমরা জেনেছি, ভোরের দিকে দুই ছেলে এক মেয়েকে নিয়ে আরমানের স্ত্রী বাসায় তালা মেরে বের হয়ে গেছেন।”

আরও খবর