সম্রাটও ধরা পড়বেন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী 

ঢাকার ক্লাবে অবৈধ ক্যাসিনো পরিচালনার খবর প্রকাশের পর নিরুদ্দেশ যুবলীগ নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে গ্রেপ্তারে ‘শিগগিরই’ সফল হওয়ার আশা প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Sept 2019, 10:24 AM
Updated : 28 Sept 2019, 10:27 AM

ক্ষমতাসীন দলের যুব সংগঠনের এই নেতাকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আটক করলেও স্বীকার করছে না বলে গণমাধ্যমে খবর আসার প্রেক্ষাপটে শনিবার ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এই আশাবাদ প্রকাশ করেন তিনি।

সম্রাটকে কি আটক করা হয়েছে- প্রশ্ন করা হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “দেখুন,তার সম্বন্ধে আপনারা অনেক কিছুই বলছেন। আমরা যেটা বলছি, সে সম্রাট হোক, যেই হোক, অপরাধ করলে তাকে আমরা আইনের আওতায় নেব।

“আমি এটা এখনও বলতেছি, সম্রাট বলে কথা নয়, যে আইনের ... তাকে আমরা নেব। আপনারা দেখবেন, খুব শিঘ্রই দেখবেন।”

গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার মতিঝিলের ক্লাবপাড়ায় র‌্যাবের অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো চলার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর থেকে আলোচনায় রয়েছে যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক সম্রাটের নাম।

সেদিন যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূইয়া গ্রেপ্তার হওয়ার পর সদলবলে কাকরাইলে সংগঠনের কার্যালয়ে অবস্থান নিয়ে রাতভর ছিলেন সম্রাট।

এরপর তাকে গ্রেপ্তারেও অভিযান চালানো হবে বলে খবর প্রকাশের মধ্যে নিরুদ্দেশ রয়েছেন এই যুবলীগ নেতা। কার্যালয়েও তিনি নেই, বাড়িতেও তাকে পাওয়া যাচ্ছে না।

গুলিস্তানের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্রের একটি কক্ষে ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের ছবিও টানানো ছিল।

র‌্যাবের অভিযানের সময় মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া চক্রের ভেতরে সম্রাটের বিশাল ছবি দেখা গিয়েছিল। ওই ক্লাবের ক্যাসিনো তিনি চালাতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

মতিঝিলের ক্লাবপাড়ায় যে ক’টি ক্যাসিনো চলছিল, তা থেকেও প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ চাঁদা যুবলীগ নেতা সম্রাটের কাছে যেত বলে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে।

সম্রাটের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বলে ইমিগ্রেশন পুলিশের এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।

অভিযান র‌্যাব চালাবে

ক্যাসিনো বন্ধে যে অভিযান, তা র‌্যাবই পরিচালনা করবেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল।

শুরুতে র‌্যাব এই অভিযানে নামলেও পরে পুলিশও কয়েকটি ক্লাবে অভিযানে যায়।

পুলিশ ঢাকার তেজগাঁওয়ের ফু-ওয়াং ক্লাবে অভিযান চালিয়ে বেআইনি কিছু না পাওয়ার কথা জানালেও পরে সেখানে অননুমোদিত মদ ও বিয়ার পাওয়ার কথা জানায় র‌্যাব।

এছাড়া ক্যাসিনো পরিচালনায় জড়িত বিদেশিদের পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করার অভিযোগও উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে; এজন্য দুজন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত হতে হয়েছে।

ফকিরাপুল ইয়ংমেনস ক্লাবে র‌্যাবের অভিযান

এসব কারণে পুলিশের উপর আস্থাহীনতার সৃষ্টি হয়েছে কি না- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমি ক্লিয়ার করে দিতে চাই, যেহেতু অভিযানটির শুরু করেছে র‌্যাব এবং আমরা বলছি ক্যাসিনোর এগুলো র‌্যাবই করবে।

“অযথা তথ্য ছাড়া কাউকে যেন হ্যারাস না করা হয়, সেজন্যই আমাদের এ পরিকল্পনা।”

আসাদুজ্জামান কামাল বলেন, “এজন্য আমরা তথ্যভিত্তিক অভিযান চালাচ্ছি। আপনারাও দেখছেন।”

এই অভিযানের বিষয়ে তিনি বলেন, “অপরাধ ঘটছে বা যারা অপরাধ ঘটাচ্ছে, এমন খবর যখন পাব, তখনই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। এটা কোনো শুদ্ধি অভিযান না। সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য যা করার প্রয়োজন, তাই আমরা করছি।”