পিলখানা হত্যাকাণ্ড ও ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা কাজল বুধবার মোয়াজ্জেমের পক্ষে এক সাক্ষীকে জেরা করতে সাইবার ট্রাইব্যুনালে আসেন। তবে মামলার নথিতে দাখিল করা ওকালতনামায় তার নাম ও স্বাক্ষর না থাকায় বিচারক তাকে জেরা করার অনুমতি দেননি।
ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি গত মার্চ মাসে তার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করলে ওসি মোয়াজ্জেম তাকে থানায় ডেকে জবানবন্দি নিয়েছিলেন।
তার কয়েক দিনের মাথায় নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়া হলে সারাদেশে আলোচনা শুরুর হয়। তখন ওই জবানবন্দির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুসরাতের মৃত্যু হলে গত ১৫ এপ্রিল ওসি মোয়াজ্জেমকে আসামি করে ঢাকায় বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
এই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের দিন থাকায় বুধবার ঢাকার এই আদালতে হাজির হন সাক্ষী সময় টেলিভিশনের প্রতিবেদক আতিয়ার হাওলাদার সজল। গত ১৯ সেপ্টেম্বর এ সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করে আদালত।
ওই দিন ওসি মোয়াজ্জেমের নিয়মিত আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ জেরার জন্য সময় চাইলে বিচারক ২৫ সেপ্টেম্বর জেরার দিন ধার্য করেন। সে অনুযায়ী সাক্ষী আতিয়ার হাওলাদার হাজির হলে আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ জেরা শুরু করেন। জেরা চলমান অবস্থায় মোশাররফ হোসেন কাজল ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হন।
এরপর কাজল জেরা শুরু করতে গেলে বিচারক মোহাম্মদ আস সামছ জগলুল হোসেন ওকালতনামায় তার নাম ও স্বাক্ষর আছে কি না জিজ্ঞাসা করেন। জবাবে মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, সিনিয়র হিসেবে এসেছেন তিনি।
ওকালতনামায় স্বাক্ষর না করলে জেরা করার সুযোগ নেই জানিয়ে তাকে তাৎক্ষণিক স্বাক্ষর করতে বলেন বিচারক। তবে মোশাররফ হোসেন কাজল তাতে রাজি না হওয়ায় এদিন তিনি আর জেরা করতে পারেননি।
শুনানিকালে মামলার বাদী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামীম উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া কারাগারে থাকা ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে কারা কর্তৃপক্ষ।
গত ২৭ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার রীমা সুলতানা ট্রাইব্যুনালে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই দিনই তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে এ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
গত ১৬ জুন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন গ্রেপ্তার হন এবং ১৭ জুন তাকে একই ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন একই বিচারক। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই আছেন।