ক্যাসিনো থাকবে কক্সবাজারে বিশেষ পর্যটন অঞ্চলে: সচিব

দেশের ক্লাবগুলোতে জুয়ার আয়োজনের বিরুদ্ধে অভিযান চললেও কক্সবাজারে প্রস্তাবিত বিশেষ পর্যটন অঞ্চলে ক্যাসিনোসহ আধুনিক সব আয়োজন থাকবে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মহিবুল হক।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Sept 2019, 10:25 AM
Updated : 24 Sept 2019, 11:22 AM

তবে সেসব ক্যাসিনোতে দেশের মানুষরা ঢুকতে পারবেন না; শুধু বিদেশিরা পাসপোর্ট দেখিয়ে সেখানে প্রবেশাধিকার পাবেন।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীকে পাশে নিয়ে মঙ্গলবার সচিবালয়ে বিশ্ব পর্যটন দিবস (২৭ সেপ্টেম্বর) উপলক্ষে সাংবাদিকদের সামনে এসে তিনি একথা বলেন।

মহিবুল হক বলেন, ক্যাসিনো পর্যটকদের জন্য দরকার। মালয়েশিয়াতে ক্যাসিনো আছে, যেগুলোতে পাসপোর্ট দিয়ে ঢুকতে হয়।

“আমরা তো তাদের জন্য এধরণের কোনো সুযোগ-সুবিধা দিতে পারছি না। আমরা যেখানে এক্সক্লুসিভ ট্যুরিস্ট জোন করব, সেখানে বিদেশিদের জন্য এসব সুযোগ-সুবিধাগুলো থাকবে।”

সচিব বলেন, তবে ক্লাবগুলোতে যেসব ক্যাসিনো চলছে তা সম্পূর্ণ অবৈধ। ক্যাসিনো থাকবে শুধু বিদেশিদের জন্য।

ব্যাংককের মতো বিদেশিদের জন্য নাইট ক্লাবও থাকবে কিনা জানতে চাইলে পর্যটন সচিব বলেন, অন্য মুসলিম দেশগুলোতে বিদেশি পর্যটকদের জন্য যেসব সুযোগ-সুবিধা বিদ্যমান আছে, বাংলাদেশে এক্সক্লুসিভ জোন হলে সে ধরণের সুযোগ-সুবিধা দিতে তো অসুবিধা নাই।

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় প্রায় একহাজার একর জমিতে ‘সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক’ নামে বিশেষ এ অঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে সরকার। সেখানে একাধিক হোটেল, কটেজ, বিচ ভিলা, নাইট ক্লাব, কনভেনশন হল, অ্যামিউজমেন্ট পার্কের মতো সুযোগ-সুবিধা থাকবে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে পর্যটন সেবাদাতাদের কাছ থেকে জমি বরাদ্দের আবেদনও চাওয়া হয়েছে।

কক্সবাজারে এক্সক্লুসিভ ট্যুরিস্ট জোন করার পাশাপাশি তিন পার্বত্য জেলাতেও পর্যটকদের জন্য কী সুযোগ-সুবিধা দেয়া যায় তা নিয়ে গবেষণা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

বেসরকারি ট্যুর অপারেটরদের জন্য কোনো আইন এবং ট্যুর গাইডদের জন্য কোনো নীতিমালা নেই জানিয়ে সচিব বলেন, “আমরা এগুলো তৈরি করেছি। আশা করছি, নভেম্বরের ভেতরে গেজেট নোটিফিকেশন হয়ে যাবে।”

সম্ভাবনাময় পর্যটন এলাকা থাকলেও সেগুলোকে আকর্ষণীয় পণ্য হিসেবে তুলে ধরার ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করেন মহিবুল।

তিনি বলেন, “সুন্দরবন কিন্তু পৃথিবীতে দ্বিতীয়টা নেই। কিন্তু আমরা কি সেখানে পর্যটকদের জন্য কোনো ব্যবস্থা করতে পেরেছি? পারিনি।

“সেই কারণেই আমরা খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরায় স্পট বাছাই করে নিয়েছি। বিদেশি পর্যটকদের জন্য সেখানেও এক্সক্লুসিভ ট্যুরিস্ট জোন করব।”

মহাপরিকল্পনায় পর্যটনখাত

পর্যটন খাতে স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদী কিছু পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, “এর মধ্যে ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনে বুয়েটের প্রতিনিধি দল জরিপ করেছে। তাদের প্রতিবেদন চূড়ান্ত পর্যায়ে। সেখানে পযর্টক বিশেষ করে বিদেশি পর্যটক যাতে আকৃষ্ট করে এবং বিদেশি বড় বড় ক্রুজ শিপগুলো ইকো ট্যুরিজম উপভোগ করতে পারে সেজন্য আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা খুব দ্রুত নেব।”

পুরো দেশকে পর্যটন আকর্ষণে পরিণত করতে মহাপরিকল্পনা চূড়ান্ত হওয়ার পথে রয়েছে বলে তিনি জানান।

সচিব বলেন, “সত্যিকার অর্থে পর্যটন নিয়ে আমাদের কোনো কর্মপরিকল্পনা ছিল না। আমরা এখন পর্যটনে একটা মাস্টার প্ল্যান প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছি। এমাসের মধ্যে আমরা ওয়ার্ক অর্ডার দিয়ে দেব।”

গত বছরের তুলনায় এ বছর পর্যটক দেড় থেকে দুই লাখ বেড়েছে বলেও জানান মহিবুল হক।