রোহিঙ্গাদের এনআইডি: সাতজনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে দুদক

কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেওয়ার পেছনে দুই নির্বাচন কর্মকর্তাসহ সাতজনের জড়িত থাকার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ার নিয়মিত অনুসন্ধানের অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Sept 2019, 07:47 AM
Updated : 23 Sept 2019, 08:03 AM

দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর এনফোর্সমেন্ট টিমের আবেদনের প্রেক্ষিতে সোমবার দুদক এই অনুমোদন দেয় বলে সংস্থাটির এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন।

“অভিযোগটি প্রধান কার্যালয়ের বিশেষ অনুবিভাগের (অনুসন্ধান) মাধ্যমে অনুসন্ধান করতে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। এছাড়া আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে অনুসন্ধান শেষ করে কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে,” বলেন এই কর্মকর্তা।

নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা জালিয়াতি, প্রতারণা ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে মিয়ানমার থেকে বিতারিত রোহিঙ্গাদের এনআইডি দিয়ে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন, যার প্রমাণ দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিমের প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।

যাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়েছে তারা হলেন- চট্টগ্রাম জেলা জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান ও চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানার সাবেক নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ শেখ। লতিফ শেখ বর্তমানে পাবনার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা।

অন্যরা হলেন- ঢাকা এনআইডি প্রজেক্টের টেকনিক্যাল এক্সপার্ট সাগর, একই শাখার সাবেক টেকনিক্যাল এক্সপার্ট সত্য সুন্দর দে, চট্টগ্রামের পটিয়ার বড় উঠান ইউনিয়মের শাহানুর মিয়া, সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাচন অফিসের অস্থায়ী অপারেটর জনপ্রিয় বড়ুয়া (পটিয়া উপজেলা নির্বাচন অফিসের অফিস সহকারী রাসেল বড়ুয়ার চাচাত ভাই) ও চট্টগ্রাম ডবলমুরিং থানা নির্বাচন অফিসের অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদীন।

তাদের মধ্যে জয়নাল আবেদীন গ্রেপ্তার হয়েছেন।

প্রাথমিক তদন্তে এনআইডি জালিয়াতিতে এদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ার পর গত ১৯ সেপ্টেম্বর এক চিঠির মাধ্যমে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর সহকারী পরিচালক রতন কুমার দাশ, উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন ও উপ-সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ জাফর সাদেক শিবলীর সমন্বয়ে গঠিত এনফোর্সমেন্ট টিম নিয়মিত অনুসন্ধানের অনুমতি চায়।

শরণার্থী হিসেবে বাংলাদেশে থাকা ১১ লাখ রোহিঙ্গাদের কেউ কেউ ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট পাওয়ার কিছু ঘটনা আগেও ঘটেছিল। তখন সতর্কতা অবলম্বনের কথাও বলা হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি এক সঙ্গে অনেক ঘটনা ধরা পড়ার স্পষ্ট হয়, সেই সতর্কতায় কাজ হয়নি। এখন সবগুলো কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসেছে।

ইসির পাশাপাশি চট্টগ্রাম, কক্সবাজারের তিনটি পাসপোর্ট কার্যালয়সহ বিভিন্নভাবে সংগ্রহ করা প্রায় দেড়শ পাসপোর্ট আবেদনপত্রের নথি সংগ্রহ করে দুদকও নেমেছে তার তদন্তে।