ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল বাতিলের উদ্যোগ

মামলা জট নিরসনে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল বাতিলের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এলক্ষ্যে ১৯৫০ সালের ‘রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইনের’ সংশ্লিষ্ট ধারা সংশোধনে একটি খসড়া প্রস্তুত করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Sept 2019, 07:43 PM
Updated : 22 Sept 2019, 07:43 PM

খসড়া আইন অনুযায়ী, মামলা বিচারের ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে সহকারী জজ/সিনিয়র সহকারী জজ আদালতকে। আপিলের ক্ষমতা পাচ্ছে জেলা জজ আদালত।

ওই খসড়া আরও যাচাই করতে আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি একটি উপ-কমিটি গঠন করেছে।

রোববার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এই উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটির সদস্য ফজলে নূর তাপসকে আহবায়ক করে গঠিত এই উপ-কমিটির অন্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন- আওয়ামী লীগের আব্দুল মজিদ খান, জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারী ও বিএনপির রুমিন ফারহানা।

কমিটির কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে ৪১টি ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে ২ লাখ ৯৭ হাজার ৭০২টি মামলা বিচারাধীন।

১৯৫০ সালের প্রজাস্বত্ব আইন অনুযায়ী গঠিত ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে রেকর্ড সংশোধনের জন্য মামলার সুযোগ রয়েছে। ঢাকা সিটি জরিপের ১৯১টি মৌজার নকশা ও রেকর্ড সংশোধনের জন্য ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়েছে। মামলা দাখিলের সময় গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর এক বছর। উপযুক্ত কারণ দর্শানো সাপেক্ষে অতিরিক্ত আরো এক বছর সময় পাওয়া যায়।

ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুন্যলের রায়ের বিরুদ্ধে ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিলের সুযোগ রয়েছে। ঢাকা সিটি জরিপের জন্য আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠিত না হওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট বিভাগে আপিল করার সুযোগ রয়েছে।

বৈঠকের কার্যপত্রে জানা যায়, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে প্রজাস্বত্ব আইন সংশোধন করে সারাদেশে মাত্র ১২টি ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। ফলে প্রতিটি ট্রাইব্যুনালে ২০ থেকে ৩০ হাজার মামলা দায়ের হয়। এতে মামলা জট ভয়াবহ আকার ধারণ করে। পরে বর্তমান সরকার সারাদেশে আরও ৪১টি ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। কিন্তু তাতেও মামলা জট কমছে না।

এই পরিস্থিতিতে ২০১৭ সালের ৯ নভেম্বর আইন মন্ত্রণালয় থেকে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের বিধান সংশোধন করে আগের মতোই জজ আদালতে বিচারের ক্ষমতা দিতে ভূমি মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু ভূমি মন্ত্রণালয় কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। পরে চলতি বছলের ২ এপ্রিল ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দিয়ে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।

কার্যপত্রে বলা হয়, বর্তমান এক জেলায় ২০ থেকে ৩০ হাজার মামলা হয়েছে। ফলে একটি মামলার শুনানির এক তারিখ থেকে পরবর্তী তারিখের মধ্যে ৬ মাস থেকে এক বছর সময় লেগে যায়। ফলে বিচারপ্রার্থীরা চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছে।

গত মে মাসে সংসদীয় কমিটি বৈঠকে সার্ভে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে।

কমিটির সভাপতি আবদুল মতিন খসরুর সভাপতিত্বে রোববারের বৈঠকে অংশ নেন কমিটি সদস্য আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শামসুল হক টুকু, আব্দুল মজিদ খান, শেখ ফজলে নুর তাপস, শামীম হায়দার পাটোয়ারী ও রুমিন ফারহানা। এছাড়াও কমিটির বিশেষ আমন্ত্রণে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।