গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনতে বাধা ‘চাঁদাবাজ চক্র’

সড়ক পরিবহন ঘিরে গড়ে ওঠা চাঁদাবাজ চক্র এই ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা আনতে বাধা হিসেবে কাজ করছে বলে দাবি করেছে একটি বেসরকারি সংগঠন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Sept 2019, 07:19 AM
Updated : 21 Sept 2019, 07:19 AM

রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলছে, গত বছর নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সড়কে শৃঙ্খলা আনতে প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশনাগুলো দিয়েছিলেন, তাও আলোর মুখ দেখেনি এই চক্রের কারণে।

শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ বাস্তবায়নে বিলম্ব : জনমনে হতাশা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনটি।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ আই মাহবুব উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান।

সাইদুর বলেন, দীর্ঘকাল ধরে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠা চাঁদাবাজ-সিন্ডিকেট গণপরিবহনে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় প্রধান বাধা। ২০১৮ সালে প্রণীত সড়ক পরিবহন আইনে আইনে জামিন অযোগ্য ধারা, সাজা ও জরিমানা বৃদ্ধির বিধান থাকায় পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা তা বাস্তবায়নে বাধা দিচ্ছেন।

“সড়ক পরিবহনমন্ত্রী নিজেই বলেছেন, পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের আপত্তির কারণে সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। মালিক-শ্রমিকরা কি সরকারের চেয়ে শক্তিশালী? রাষ্ট্রের চেয়ে বড়? তাহলে সরকার তাদের কেন আস্কারা দিচ্ছে?”

পরিবহন খাতে চাঁদাবাজির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা আবার পুলিশের বিরুদ্ধেও চাঁদাবাজির অভিযোগ করে আসছে।

সংবাদ সম্মেলনে বাসদ নেতা রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, “আইন ও ফাইন দিয়ে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো যাবে না। এজন্য চালকদের অধিকার ও দাবিগুলোর প্রতিও নজর দিতে হবে।
“তাদের জন্য কোনো কর্মঘণ্টা নেই,  বিশ্রামের ব্যবস্থা নেই। তাদের অনেক না পাওয়ার হতাশা আছে, প্রতিদিনের গ্লানি আছে। আমরা সড়ক পরিবহন আইন করতে গিয়ে তাদের যেন প্রতিপক্ষ মনে না করি।”

সংবাদ সম্মেলনে দৈনিক প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খান, রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের ‌ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ শরীফ, মোহাম্মদ শাহজাহান সিদ্দিকী, অধ্যাপক হাসিনা বেগম উপস্থিত ছিলেন।
নতুন সড়ক পরিবহন আইনে বেশ কিছু অসঙ্গতি আছে বলে মনে করেন মিজানুর রহমান।

তিনি বলেন, “এ আইনে আদালতের জুরিসডিকশনকে অস্বীকার করা হয়েছে। দুর্ঘটনায় নিহত বা আহত হওয়া ব্যক্তি ক্ষতিপূরণের জন্য আদালতে যেন যেতে না পারে, তা এই আইনে নিশ্চিত করা হয়েছে। 

“এ আইনে ক্ষতিপূরণের জন্য একটি আর্থিক সহায়তা তহবিল গঠনের কথা বলা হয়েছে। আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ যেন দুর্ঘটনায় পতিত ব্যক্তির অধিকার নয়, সরকারের দয়া দাক্ষিণ্যের বিষয়।”