বগুড়ার বিএনপি নেতা শোকরানার সম্পদের হিসাব তলব

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পেয়ে বগুড়ার বিএনপি নেতা হোটেল নাজ গার্ডেনের মালিক মোহাম্মদ শোকরানার সম্পদের হিসাব তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Sept 2019, 12:17 PM
Updated : 17 Sept 2019, 12:28 PM

২১ কার্যদিবসের মধ্যে তাকে সম্পদের বিবরণী জমা দিতে সোমবার তার বগুড়া সদরের ছিলিমপুর ঠিকানায় নোটিস পাঠানো হয়েছে বলে কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন।

নোটিসে বলা হয়, প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রাথমিক অনুসন্ধান করে কমিশনের স্থির বিশ্বাস জন্মেছে যে, শোকরানা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত স্বনামে/বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পদ/সম্পত্তির মালিক হয়েছেন।

শোকরানাকে নিজের, নির্ভরশীল ব্যক্তিবর্গের যাবতীয় স্থাবর/অস্থাবর সম্পত্তি, দায়-দেনা, আয়ের উৎস ও তা অর্জনের বিস্তারিত বিবরণ নির্ধারিত ফরমে দাখিল করতে বলা হয়।

দুদকের বগুড়া সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. মনিরুজ্জামানকে অবৈধ সম্পদ অর্জনের এই অভিযোগ অনুসন্ধান করছেন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বগুড়া জেলা শাখার উপদেষ্টা মোহাম্মদ শোকরানার বিরুদ্ধে ২০০৭ সালে সেনা নিয়ন্ত্রিত ত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বহুল আলোচিত ডাল কেলেঙ্কারি এবং ত্রাণের কম্বল মজুত করার অভিযোগে মামলা হয়।

তার ১৫টি গুদাম থেকে সাড়ে ৫ কোটি টাকা মূল্যের সাড়ে ১৮ হাজার বস্তা মসুর ডাল এবং বিপুল পরিমাণ ত্রাণের কম্বলসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ছবি ফেইসবুক নেয়া।

পরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২০১১ সালে ‘রাজনৈতিক হয়রানিমূলক’ বিবেচনায় তার বিরুদ্ধে মামলাটি প্রত্যাহার করা হয়। আওয়ামী লীগ আমলে বিএনপির নেতার সুবিধা পাওয়া এলাকায় নানা আলোচনা আছে।

১৯৭২ থেকে ৭৫ পর্যন্ত যুবলীগের ছত্রচ্ছায়ায় শোকরানা বগুড়া শহরে বিভিন্ন অপরাধের নেতৃত্বে ছিলেন বলে অভিযোগ আছে। বাদুড়তলা এলাকার মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব উদ্দিন, কিবরিয়া, দত্তবাড়ি এলাকার আনু হত্যাসহ বহু খুনের সঙ্গে তার জড়িত থাকার অভিযোগ আছে। এর মধ্যে কিবরিয়া হত্যার ঘটনায় তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হলেও তিনি সোয়া ছয় বছর কারাভোগ করেন।

পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট তাকে গ্রেপ্তার করা হয়; ১৯৮১ সালে বিচারপতি আবদুস সাত্তার ক্ষমতায় এলে সাধারণ ক্ষমায় ‘মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে মুক্তি পান। কিছুদিন নিষ্ক্রিয় থাকার পর আশির দশকে এরশাদের হাত ধরে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। তখন জাতীয় পার্টির বগুড়া শহর কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৯৯ সালে তারেক রহমানের হাত ধরে বিএনপিতে যোগ দেন।

তবে এখন তিনি রাজনীতি থেকে দূরে সরে প্রবাসজীবন কাটাচ্ছেন বলে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে।