মৌমাছির হানা: এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটে ৩ ঘণ্টা আটকে তথ্যমন্ত্রী

আগরতলায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসবে যোগ দিতে যাওয়ার পথে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদকে কলকাতা বিমানবন্দরে এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটে তিন ঘণ্টা আটকে থাকতে হয়েছে মৌমাছির কারণে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Sept 2019, 06:00 AM
Updated : 16 Sept 2019, 06:36 AM

কলকাতা টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৩৬ জন যাত্রী নিয়ে এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট এআই-৭৪৩ উড়াল দেওয়ার কথা ছিল রোববার সকাল ৯টা ৪০ এ। কিন্তু দুইবার ট্যাক্সিয়িং শুরু করেও রানওয়ে থেকে ফিরে আসে উড়োজাহাজটি।  

এয়ার ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে শুরুতে ‘কারিগরি ত্রুটির’ কথা বলা হয়। কিন্তু বিরক্ত বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্যরা নেমে যেতে চাইলে কেবিন ক্রু দরজা খোলার চেষ্টা করেন। তখনই মৌমাছির বিষয়টি ধরা পড়ে।

পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে পানি ছিটিয়ে মৌমাছির ঝাঁকটিকে তাড়িয়ে দিলে স্থানীয় সময় বেলা ১২টা ৪০ মিনিটে ওই এয়ারবাস- ৩১৯ কলাকাতা ছাড়ে বলে কলকাতা সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এবং অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচীসহ বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের ১৮ সদস্যকে এই পুরোটা সময় উড়োজাহাজেই বসে থাকতে হয়। বাংলাদেশ সরকারের আয়োজনে রোববার বিকাল থেকে শুরু হওয়া তিন দিনের বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসবে যোগ দিতে আগরতলায় যাচ্ছিলেন তারা।

ফ্লাইট ছাড়ার অপেক্ষার মধ্যেই হাছান মাহমুদ টেলিফোনে কলকাতা মেট্রোকে বলেন, দেরি দেখে তিনি উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান কিছুটা পিছিয়ে দিতে অনুরোধ করেছিলেন আয়োজকদের।  

আগরতলা পৌঁছানোর পর বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। ছবি: রোকেয়া প্রাচীর ফেইসবুক থেকে

টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়, তিন ঘণ্টা বিমানের ভেতরে বসে থেকে বিরক্ত হয়ে উঠেছিলেন বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। কয়েকজন অভিযোগ করেছেন, সমস্যাটা কোথায়- সে বিষয়ে এয়ার ইনডিয়া কর্তৃপক্ষ তাদের কিছুই জানায়নি, তারা যেভাবে বিষয়টা সামলানোর চেষ্টা করেছে, তাতে পেশাদারিত্বের অভাব ছিল।

তথ্যমন্ত্রী মেট্রোকে বলেন, জটিলতা যেহেতু হয়েছে, এয়ার ইনডিয়া কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের অন্য কোনো উড়োজাহাজে তুলে দিলে বরং ভালো করত। 

বিমানবন্দর কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে টেলিগ্রাফ লিখেছে, ফ্লাইট কখন ছাড়বে নিশ্চিত হতে না পেরে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের কয়েকজন বিকল্প ব্যবস্থা করার জন্য উড়োজাহাজ থেকে নামিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন। কেবিন ক্রু তাদের নামিয়ে দেওয়ার জন্য দরজা খুলতে গিয়ে মৌমাছির ঝাঁক দেখতে পান। 

ওই উড়োজাহাজের বাঁ দিকের উইন্ডস্ক্রিন আর জানালায় আশ্রয় নিয়েছিল মৌমাছির ওই ঝাঁক। এ অবস্থা দেখে ওই কেবিন ক্রু আর দরজা খুলে যাত্রী নামানোর সাহস করেননি।

এয়ার ইনডিয়ার একজন মুখপাত্র বলেন, “কারিগরি ত্রুটির কারণে ফ্লাইটের উড্ডয়ন বিলম্বিত হয়। এরপর উড়োজাহাজটি মৌমাছির কবলে পড়ে। তখন ফায়ার সার্ভিস ডাকা হয়। শেষ পর্যন্ত বেলা ১২টা ৪০ এ ফ্লাইট ছেড়ে যায়।    

কলকাতা বিমানবন্দরের পরিচালক কৌশিক ভট্টাচার্য্য টেলিগ্রাফকে বলেন, “আশপাশে কোনো বড় গাছ নেই। হ্যাঙ্গারের কোথাও মৌমাছি বাসা বেঁধেছে কি না আমরা খুঁজে দেখছি।” 

২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে এ বিমানবন্দরে জেট এয়ারের চারটি বিমান মৌমাছির কারণে ছয় ঘণ্টা বিলম্বিত হয়। ওই মাসেই ইনডিগোর আরেকটি ফ্লাইট ২১ মিনিট রানওয়েতে আটকে থাকে উইন্ডস্ক্রিনে মৌমাছির হানার কারণে।