কৃষকের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা স্বীকার করলেন মন্ত্রী

প্রান্তিক চাষিদের উৎপাদিত ধানের দাম বাড়াতে সরকার নানা পদক্ষেপ নিলেও তার প্রতিফলন বাজারে পড়েনি বলে স্বীকার করেছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Sept 2019, 03:36 PM
Updated : 12 Sept 2019, 03:52 PM

তিনি বলেছেন, “কৃষকেরা ধান বিক্রি করে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় কৃষক প্রচণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে।”

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, এবার বোরো মৌসুমে উদ্বৃত্ত হওয়াতে ধানের চাহিদা কমে গেছে। দাম কমে গেছে। এদিকে দাম কমার পাশাপাশি উৎপাদন খরচও বেড়েছে।

কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক (ফাইল ছবি)

“এজন্য আমরা ধানের দাম বাড়াতে নানা পদক্ষেপ নেই। তবে তড়িৎগতিতে পদক্ষেপ নিলেও তার প্রতিফলন বাজারে খুব একটা পড়েনি। কারণ গুদামে পর্যপ্ত জায়গা না থাকায় প্রত্যক্ষভাবে চাষিদের থেকে ধান কেনা সম্ভব হয়নি।”

কৃষকরা ধান উৎপাদন করে ন্যয্যমূল্য পাবে না- এটা হতে পারে না মন্তব্য করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, এটার পুনরাবৃত্তি রোধে ভবিষ্যতে সরাসরি চাষীর থেকে ধান কেনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এজন্য চাষীদের তালিকা মৌসুমের অনেক আগেই করা হবে। এই তালিকা স্থানীয় পর্যায়ে টাঙিয়ে দেওয়া হবে।

“আর এবার প্রকৃত চাষীর থেকে ধান কেনা হয়েছে কি না, মন্ত্রণালয় থেকে তা যাচাই করা হচ্ছে। কেনা না হলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

মন্ত্রী বলেন, “কৃষকদের তালিকার বিষয়ে কৃষি কর্মকর্তারা চাষীদের জানিয়ে দেবেন। আমরা ধান বিক্রির বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়ন করছি। এটি মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে। সরকার ধনী কৃষক, মধ্যম আয়ের কৃষক ও প্রান্তিক চাষীদের তালিকা তৈরি করবে। সরকার ধনী চাষীদের কাছ থেকে ২০ ভাগ ধান, মধ্যম আয়ের চাষীদের কাছ থেকে ৩০ ভাগ এবং প্রান্তিক চাষীদের কাছ থেকে বেশির ভাগ ধান কিনবে।

“আশা করি, এই পদক্ষেপ নিলে চাষীরা ধানের দাম আগের চেয়ে বেশি পাবেন এবং বাজারে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত কৃষক দরদী। তিনি নানাভাবে কৃষকদের সহযোগিতা করছেন। তাই ধান বা ফসল আবাদ করে তারা ন্যায্য মূল্য পাবেন না এবং লাভবান হবেন না, এটা হতে পারে না।”

মজুরি খরচ বেশি হওয়ায় উৎপাদন খরচ বেশি হচ্ছে উল্লেখ করে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “আমরা চাই কৃষক ন্যায্যমূল্য পাক। এটাই সরকারের নীতি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কৃষির যান্ত্রিকীকরণে যাব। ধান লাগানো ও ধান কাটার যন্ত্রের দাম অনেক বেশি।

“আমরা ধান লাগানো ও কাটার যন্ত্র কেনার ক্ষেত্রে কৃষকদের ভর্তুকি দেব। এই মুহূর্তে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা উভয় সংকটে পড়েছি। আগে ধান উৎপাদন হত না, দুর্ভিক্ষ হত। এখন উৎপাদন বেশি হওয়ায় আমরা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছি। আশা করি, আমরা ভবিষ্যতে সমাধান করতে পারব।”