পরিবারে আ.লীগ-বিএনপি থাকলে ছাত্র সমাজে জায়গা নয়: রাঙ্গাঁ

কারও পরিবারের কেউ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকলে তাকে জাতীয় পার্টির ছাত্র সংগঠনের সদস্য করা হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতৃত্বে মহাজোটের শরিক দলটির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Sept 2019, 01:07 PM
Updated : 11 Sept 2019, 01:21 PM

শুধু আওয়ামী লীগই নয় কারো পরিবারের সদস্যদের মধ্যে কেউ বিএনপি করলে তিনিও জাতীয় ছাত্র সমাজে জায়গা পাবেন না বলে বুধবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে বলে তিনি।

কাকরাইলে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (আইবি) মিলনায়তনে ছাত্র সংগঠনটির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন রাঙ্গাঁ।

তিনি বলেন, “কারও পরিবারে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সদস্য থাকার প্রমাণ পেলে তাদের কোনোভাবেই ছাত্র সমাজের সদস্যপদ দেওয়া হবে না।”

সামরিক শাসক থেকে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের পর এইচএম এরশাদ সহায়ক বাহিনী হিসেবে ছাত্র সমাজ গড়ে তোলেন। নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানে এরশাদ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর জাতীয় পার্টির নির্বাচনী রাজনীতিতে ভূমিকা রাখলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে জায়গা পায়নি ছাত্র সমাজ।

এরশাদ পতনের আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রায় সব ছাত্র সংগঠন জাতীয় সমাজকে ক্যাম্পাসের রাজনীতিতে প্রবেশ করতে না দেওয়ার বিষয়ে মোটামুটি ঐক্যবদ্ধ ছিল।

কিন্তু ১৯৯৭ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে সঙ্গে নেওয়ার পর সেই চিত্র পাল্টাতে থাকে। গত দুই মেয়াদে জাতীয় পার্টি সরকারের শরিক ছিল। গত সংসদে তারা একইসঙ্গে বিরোধী দলের ভূমিকায় এবং সরকারেও ছিলেন, রাঙ্গাঁ ছিলেন সমবায় প্রতিমন্ত্রী। এবারই প্রথম সরকারে জায়গা হয়নি তাদের।

দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াতে ইসলামীর পরিবারের কাউকে আওয়ামী লীগের সদস্য এবং তাদের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবির থেকে আসা কাউকে ছাত্রলীগের সদস্য করা নিয়ে বিতর্ক আছে।

তবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, সদস্য করার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ড বিচার করা হবে, পরিবারের নয়।

এছাড়া পরিবারের কোনো সদস্যের রাজনৈতিক মতাদর্শের জন্য কেউ কোনো সংগঠনের সদস্য হতে পারবে না এমন আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এর আগে শোনা যায়নি।            

ছাত্র সমাজের সভায় সংসদ নির্বাচন ও পরে ডাকসু নির্বাচনে দলের প্রশ্ন উঠলে রাঙ্গাঁ বলেন, “আমাদের জবাব দেওয়ার আছে, সময়মতো জবাব দেওয়া হবে। তবে এর জন্য উপযুক্ত প্রস্তুতি নিতে হবে। দল যদি সঠিক পথে থাকে, তাহলে বিজয়ী হব আমরা। চার বছর পর যে নির্বাচন আসছে, আমাদের তার প্রস্তুতি নিতে হবে।

“২০২৩ সালের নির্বাচনে আমাদের চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েই ছাড়ব।”

ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় কাউন্সিলের আগে কোনো প্রেসিডিয়াম সদস্য অকার্যকর থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুশিয়ারি দেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব।

তিনি বলেন, “আজকে অনেকে অনেক কথা বলেন। নানা তামাশা দেখছি। ফেইসবুক খুললে দেখি, নানা জনের নানা পরামর্শ। তবে আমি এদের ঠিক করে যাব, ঠিক করতে এসেছি আমি।”

সভায় ভ্যেনু না পাওয়ায় জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কাউন্সিল পিছিয়ে ২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা জানান দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদের।

জাতীয় ছাত্র সমাজ কেন্দ্রীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক মো. জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে সভায় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, আদেলুর রহমান আদেল ও রেজাউল ইসলাম বক্তব্য দেন।