‘খুব তাড়াতাড়ি’ ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের আশা

হাসপাতালে ভর্তি নতুন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা যেভাবে পড়েছে তাতে ‘খুব তাড়াতাড়িই’ এই রোগ নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Sept 2019, 03:23 PM
Updated : 10 Sept 2019, 03:23 PM

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুয়ায়ী, মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত সারা দেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় ৭৫৩ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন। ঠিক এক মাস আগে ১০ অগাস্ট হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন দুই হাজার ১৭৬ জন ডেঙ্গু রোগী।

রাজধানীর সরকারি-বেসরকারি ৪১টি হাসপাতালের ডেঙ্গু রোগীর তথ্য দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর মধ্যে গত চব্বিশ ঘণ্টায় ৯টি হাসপাতালে কোনো নতুন রোগী ভর্তি হয়নি। সারা দেশের ১৭টি জেলায় ২৪ ঘণ্টায় কোনো নতুন রোগী ভর্তি হয়নি বলেও জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

সপ্তাহখানেক ধরেই নতুন করে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা কম জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এ ধারা অব্যাহত থাকলে ‘খুব তাড়াতাড়ি’ ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আসবে।

“ডেঙ্গু রোগী কিছুটা কমতির দিকে। সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গুর পিক সিজন। তবে গত সাতদিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা সাতশ’র মতো ছিল। অগাস্টের এ সময় তা ছিল দুই হাজারের বেশি। এছাড়া কয়েকটি হাসপাতাল আছে যেখানে কোনো নতুন রোগী ভর্তি হয়নি। প্রতিদিন ভর্তি রোগীর সংখ্যা পাঁচশর নিচে আসলে বলা যাবে ডেঙ্গু মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে এসেছে।”

অগাস্টের প্রথম ১০ দিন ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে যে সংখ্যক রোগী ভর্তি হয়েছিলেন, সেপ্টেম্বরের প্রথম ১০ দিনে হয়েছেন তার চেয়ে দুই তৃতীয়াংশ কম।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য বলছে, ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে ৭৭ হাজার ৯৮৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

সেপ্টেম্বরের প্রথম দশ দিনে ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারা দেশের বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে ৬ হাজার ৮৮৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন। অগাস্টের প্রথম ১০ দিন ভর্তি হয়েছিলেন ২০ হাজার ৪৩৯ জন।

চলতি বছরের এপ্রিলে ৫৮ জন, মে মাসে ১৯৩ জন, জুনে ১৮৮৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। জুলাইয়ে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ হাজার ২৫৩ জন। 

অগাস্টে হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা সব রেকর্ড ভেঙে ৫২ হাজার ৬৩৬ জনে গিয়ে পৌঁছায়। ২০০০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত কোনো মাসে এত সংখ্যক ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে ভর্তি হননি। 

মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ৩ হাজার ৭২ জন রোগী। রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ১ হাজার ৪৯৮ জন, ঢাকার বাইরে ১ হাজার ৫৭৪ জন।

সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৩০৯১ জন চিকিৎসাধীন ছিলেন। এর মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল মিলিয়ে ঢাকার ৪১টি চিকিৎসা কেন্দ্রে ছিলেন ১ হাজার ৫২২ জন, সারা দেশে ১ হাজার ৫৬৯ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে ৭৭২ জন রোগী বাড়ি ফিরে গেছেন বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে।

চলতি বছরের প্রথম দিন থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত ৭৭ হাজার ৯৮৩ জন ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। আর এই সময়ে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরেন ৭৪ হাজার ৭১৪ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ৯৮ শতাংশ সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন।

এই সময়ের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ, গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) ডেঙ্গু সন্দেহে ১৯৭টি মৃত্যুর তথ্যে এসেছে। এর মধ্যে ১০১টি মৃত্যু পর্যালোচনা করে ৬০টি মৃত্যু নিশ্চিত করেছে আইইডিসিআর।