তিন দশক পর ডাকসু নির্বাচনের পর ছয় মাস পার হতে চললেও প্রকট আবাসন সংকটসহ শিক্ষার্থীদের নানা সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি পূরণে দৃশ্যমান কোনো তৎপরতা না থাকলেও ব্যক্তিগত আরামের জন্য ডাকসুর সাধারণ সম্পাদকের (জিএস) এমন আয়োজনকে ভাল চোখে দেখছেন না সমালোচকরা।
তবে রাব্বানীর দাবি, অত্যাধিক গরমের কারণে এক ‘শুভাকাঙ্ক্ষী’র তাকে ‘উপহার’ হিসেবে এসি লাগিয়ে দিয়েছেন। ডাকসুর অন্য পদাধিকারীরা চাইলে তাদের জন্যও এসি দিতে তিনি রাজি।
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের এক ছাত্র বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আরাম-আয়েশ করার জন্য শিক্ষার্থীরা তাকে ডাকসুর জিএস নির্বাচিত করেনি। নিজের কক্ষে এসি লাগানোর আগে শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যার সমাধানে উদ্যোগ নেওয়ার কথা ছিল তার। এবিষয়ে তার জবাবদিহি করা উচিত।”
ডাকসু ভবনের কক্ষগুলোতে এসি লাগানোর জন্য রাব্বানী প্রস্তাব নিয়ে এলেও তাতে সমর্থন দেননি বলে জানালেন ডাকসু সহ-সভাপতি (ভিপি) ভিপি নুরুল হক নুর।
জিএসের কক্ষে এসি লাগানোর বিষয়ে ডাকসুর এজিএস, বেশ কয়েকজন সম্পাদকীয় পদধারী ও সদস্যের মন্তব্য জানতে চাইলেও তারা রাজি হননি।
রাব্বানীর কক্ষে এসি লাগানোর বিষয়ে অবগত কিনা জানতে চাইলে টিতে ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেন বলেন, “আমার জানা নাই। তবে আমার রুমে নাই।”
অনুসন্ধানে জানা গেছে, অগাস্টের শুরুর দিকে রাব্বানীর অফিস কক্ষে তার ‘শুভাকাঙ্ক্ষীর’ দেওয়া এই এসি লাগানো হয়। তবে ডাকসুর ভিপি, এজিএসসহ অন্যান্য সম্পাদকদের কক্ষগুলোতে কোনো এসি লাগানো হয়নি।
এই বিষয়ে ছাত্রলীগ ও ডাকসুর জিএস গোলাম রাব্বানী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ডাকসুতে আমাদের কক্ষগুলো দ্বিতীয় তলায় এবং উপরে আর কিছু নেই। এখানে রোদ বেশি হওয়ার কারণে এগুলো বিবেচনায় নিয়ে আমাদের এক শুভাকাঙ্ক্ষী, আমার বিভাগের সাবেক এক বড় ভাই এটি উপহার দিয়েছেন।
“তিনি অন্যদের রুমেও লাগানোর কথা বলেছিল, তারা চাইলে হয়তো তাদের রুমেও লাগানোর ব্যবস্থা করবেন।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ডাকসুর সভাপতি অধ্যাপক মো আখতারুজ্জামান এবং ডাকসুর কোষাধ্যক্ষ বাণিজ্য অনুষদের ডিন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলামকে জানিয়েই এসি লাগানো হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
এবিষয়ে উপাচার্যের বক্তব্য জানতে একাধিকবা তার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে ও তার ব্যক্তিগত সহকারীর নম্বরে কল করলেও তারা রিসিভ করেননি।
তবে ডাকসুর কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শিবলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এসি বিশ্ববিদ্যালয় বা ডাকসুর টাকা দিয়ে লাগানো হয়নি, এটা স্পষ্ট। কিন্তু এসি লাগানোর বিষয়ে আমাকে জানানো হয়েছে কি না, তা আমি এখন মনে করতে পারছি না।”
এসি লাগানোর বিষয়টি বিধিসম্মত হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি স্পষ্ট করে কিছু না বলে উপাচার্যের কাছে জানতে বলেন।