নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের শিপ সার্ভেয়ার মির্জা সাইফুর রহমানকে সোমবার দুপুরে অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, নৌ পরিবহন অধিদপ্তরে দুদকের সহকারী পরিচালক আবদুল ওয়াদুদের নেতৃত্বে একটি বিশেষ দল অভিযান চালায়।
আবদুল ওয়াদুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এক অভিযোগকারীর কাছ থেকে তথ্য পেয়ে তারা মির্জা সাইফুরের অফিসে অভিযানে যান।
“জাহাজের সার্ভে সংক্রান্ত কাজ করে দেওয়ার জন্য ঘুষ হিসেবে দুই লাখ টাকা নেওয়ার সময় তাকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়।”
প্রনব কুমার বলেন, গত জুনের আগে ঢাকার সদরঘাট বন্দরের কর্তব্যরত নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের সার্ভেয়ার মির্জা সাইফুরকে এম ভি খাদিজাতুল কোবরা নামের নৌযানের সার্ভে করতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু তিনি টাকা ছাড়া জাহাজের সার্ভে করবেন না বলে এর মালিককে জানিয়ে দেন।
“পরে সার্ভেয়ার মির্জা সাইফুর ওই জাহাজের সার্ভে এবং ফিটনেস বাবদ দুই লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। এরপর গত ২৩ জুন জাহাজটি সার্ভে করানোর জন্য অন-লাইনে নৌ পরিবহন অধিদপ্তর আবেদন করে জাহাজ কর্তৃপক্ষ। একই সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়। এ আবেদনের পরও মির্জা সাইফুর ঘুষের টাকার জন্য ওই জাহাজটি সার্ভে না বলে তালবাহানা করতে থাকেন।”
এরপর ১ সেপ্টেম্বর জাহাজ কর্তৃপক্ষ মতিঝিল বিআইডব্লিউটিএ ভবনের আটতলায় মির্জা সাইফুর রহমানের অফিস কক্ষে জাহাজের সার্ভে করার জন্য পুনরায় অনুরোধ করলে তিনি আগের মতই দুই লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন বলে জানান প্রনব।
“এরমধ্যে জাহাজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দুদককে অবহিত করলে কমিশন সকল বিধি-বিধান অনুসরণ করে ফাঁদ পেতে পূর্বনির্ধারিত সময়ে ওঁৎ পেতে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা সাইফুরকে গ্রেপ্তার করে।”
এ বিষয়ে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ কমিশনের সহকারী পরিচালক আবদুল ওয়াদুদ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।
মামলার পর ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে হাজির করে তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন ওয়াদুদ; যিনি মামলাটির তদন্তও করছেন।
সে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কেএম ইমরুল কায়েস সার্ভেয়ার মির্জা সাইফুরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।