ডেঙ্গু: মশা নিয়ন্ত্রণের পথ খুঁজতে আসছে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ দল

ডেঙ্গু সমস্যার দীর্ঘমেয়াদী সমাধানে এ রোগের জীবাণু বাহক এইডিস মশার বিস্তার ঠেকানোর পথ খুঁজতে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ), জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) একদল বিশেষজ্ঞ আসছেন বাংলাদেশে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 August 2019, 05:15 AM
Updated : 21 August 2019, 05:15 AM

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক এই বিশেষজ্ঞ দলটি বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত বাংলাদেশে থাকবেন এবং এইডিস মশার বিস্তার ঠেকাতে এখানে ‘স্টেরাইল ইনসেক্ট টেকনিক’ কার্যকর হবে কি না, তার সম্ভাব্যতা যাচাই করবেন।

চলতি বছর বাংলাদেশে এ রোগে আক্রন্তের সংখ্যা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৫৬ হাজার ৩৬৯ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। সরকারি হিসাবে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৪০ জনের।

তবে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতাল ও জেলার চিকিৎসকদের কাছ থেকে অন্তত ১৭৪ জনের মৃত্যুর তথ্য এসেছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কাছে।

এবার বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই রাজধানীতে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়, পরে তা ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। আগাম বর্ষার পাশাপাশি মশার বিস্তার ঠেকাতে না পারাকে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

তারা বলছেন, সিটি করপোরেশেন যেভাবে ফগার মেশিন ব্যবহার করে নালা নর্দমায় মশা মারার ওষুধ ছিটায়, তাতে অন্য মশা কমলেও এইডিস মশা নিয়ন্ত্রণে সাফল্য পাওয়া সম্ভব না, কেননা এ মশা থাকে মূলত ঘরে।

জমে থাকা সামান্য পরিমাণ পরিষ্কার পানিতেই এইডিস মশা বংশ বিস্তার করতে পারে। এর ডিম টিকে থাকতে পারে এক বছর পর্যন্ত। এ কারণে সবাইকে যার যার বাসা ও আশপাশ পরিচ্ছন্ন রাখা, কোথাও পানি জমতে না দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে আসছেন বিশেষজ্ঞরা।   

স্টেরাইল ইনসেক্ট টেকনিক (এসআইটি) হল কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণের একটি পরিবেশ-বান্ধব পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে তেজস্ক্রিয়ার মাধ্যমে পুরুষ মশাকে বন্ধ্যা করে একটি নির্দিষ্ট এলাকায় ছেড়ে দেওয়া হয়। ফলে ওই এলাকায় স্ত্রী মশা ডিম পাড়লেও তা নিষিক্ত হবে না। তাতে মশার সংখ্যা কমে আসবে।

এ পদ্ধতি বাংলাদেশে এইডিস মশা নিয়ন্ত্রণে কতটা কার্যকর হবে তা যাচাই করে দেখতেই আসছেন আইএইএ-এফএও-ডব্লিউএইচও বিশেষজ্ঞ দল।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ভিয়েনায় বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করার পর আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা বিশেষজ্ঞ দলকে সফরের অনুমতি দেয়।

এই বিশেষজ্ঞ দলে থাকছেন এফএও/আইএইএ- এর খাদ্য ও কৃষি বিষয়ক পারমাণবিক প্রযুক্তি বিভাগের টেকনিক্যাল অফিসার রাফায়েল আর্জিল হেরেরো ও দানিলো ডি অলিভেরা কার্ভালো এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ভেক্টর ইকোলজি অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিশেষজ্ঞ রাজপাল যাদব।

ভিয়েনায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম আবু জাফর বলেন, “আমরা এইডিস মশা নিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে ভালো বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছি। এই জরুরি সময়ে বাংলাদেশের ডাকে দ্রুত সাড়া দেওয়ায় আমরা আইএইএকে ধন্যবাদ জানাই।”