রোহিঙ্গাদের ফেরাতে ‘বড় ভূমিকায়’ চীন: মন্ত্রিপরিষদ সচিব

বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনের উদ্যোগে মিয়ানমারের মিত্র হিসেবে পরিচিত চীনের ‘বড় ভূমিকা’ থাকছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 August 2019, 01:59 PM
Updated : 19 August 2019, 02:05 PM

তবে কবে থেকে প্রত্যাবাসন শুরু হবে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এসব কথা বলেন।

গত ১-৬ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরের সময় দেশটির সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে সহায়তার আশ্বাস মেলে।

রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমিতে ফেরানোর পরিবেশ তৈরিতে চীন মিয়ানমারকে রাজি করানোর পদক্ষেপ নেবে বলে শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন চীনা প্রধানমন্ত্রী লি খ্য ছিয়াং।

ওই সময় শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) আন্তর্জাতিক বিষয় সম্পর্কিত মিনিস্টার সান তাও তাদের দলের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার আশ্বাসও দেন।

পরে চীনের প্রসিডেন্ট শি চিন পিংও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে দ্রুত রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে গুরুত্ব দেন।

প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর নিয়ে মন্ত্রিপরিষদকে অবহিত করার বিষয়ে সচিব শফিউল বলেন, “রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীনের প্রধানমন্ত্রী এবং মহামান্য রাষ্ট্রপতি দু’জনই ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন। তারা বলেছেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য যত রকমের সহযোগিতা দেওয়া দরকার তারা দিয়ে যাবে।

“মিয়ানমারকে বোঝানোর জন্য চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে দুইবার পাঠানো হয়েছে। আরও যদি পাঠানোর প্রযোজন হয় পাঠাবেন এবং উনারা যত রকমের সাহায্য সহযোগিতা দরকার দেবে। আর ওখানে পরিবেশ তৈরির জন্যও সাহায্য করবে- এটা একটা বড় প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে।”

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কী চীনের মধ্যস্থতায় হবে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “চীনের একটা বেশ বড় ভূমিকা আছে।”

সম্প্রতি রয়টার্সের এক খবরে আগামী ২২ অগাস্ট রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর কথা বলা হয়। তবে রোববার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নে পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হকও প্রত্যাবাসন কবে শুরু হবে তা জানাননি।  

যদিও রোববার দুপুরে কক্সবাজারে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে একটি জরুরি বৈঠকের পর চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার নূরুল আলম নেজামী ২২ অগাস্ট সামনে রেখে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। 

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ২২ অগাস্ট শুরু হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে সোমবার  মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম বলেন, “না, এটা মনে হয় এখনও ফাইনাল হয়নি। সেজন্য বলতে পারছি না।”

দুই বছর আগে মিয়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনীর দমন অভিযান শুরুর পর সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে ছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা।

এই বিপুল সংখ্যক শরণার্থীদের নিজ দেশে ফেরাতে দুই দেশের মধ্যে চুক্তিও হয়েছে, যার আলোকে গত বছর নভেম্বরে প্রত্যাবাসন শুরুর প্রস্তুতিও নিয়েছিল বাংলাদেশ।

কিন্তু মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে রোহিঙ্গাদের মনে আস্থা না ফেরায় এবং তারা কেউ ফিরে যেতে রাজি না হওয়ায় সেই পরিকল্পনা ঝুলে যায়।