নকশা জালিয়াতি: এফআর টাওয়ারের ফারুকও গ্রেপ্তার

ঢাকার বনানীর এফআর টাওয়ারকে ২৩ তলা পর্যন্ত বাড়ানোর জন্য নকশা জালিয়াতির মামলায় এবার ওই ভবনের অন্যতম মালিক এসএমএইচআই ফারুককে গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 August 2019, 08:47 AM
Updated : 19 August 2019, 08:48 AM

সোমবার বেলা ১টায় রাজধানীর গুলশান-২ এলাকায় থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য জানান।

এর আগে এ মামলার আরেক আসামি এফ আর টাওয়ার ওনার্স সোসাইটির সভাপতি কাসেম ড্রাইসেলের এমডি তাসভীর-উল- ইসলামকে রোববার সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করার কথা জানায় দুদক।

গত ২৮ মার্চ এফআর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ২৭ নিহত হওয়ার পর এই ভবন নির্মাণে নানা অনিয়মের বিষয়গুলো বেরিয়ে আসতে থাকে।

কামাল আতাতুর্ক এভিনিউয়ে ওই ভবনের জমির মূল মালিক ছিলেন প্রকৌশলী এস এম এইচ আই ফারুক। অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ভবনটি নির্মাণ করে রূপায়ন হাউজিং এস্টেট লিমিটেড। সে কারণে সংক্ষেপে ভবনের নাম হয় এফআর টাওয়ার।

নকশা জালিয়াতির মাধ্যমে ভবনটিতে কয়েকটি তলা বাড়ানোর অভিযোগে গত ২৫ জুন তাসভীরসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছিলেন দুদক কর্মকর্তা মো. আবুবকর সিদ্দিক।

একটি মামলায় রাজউকের ভুয়া ছাড়পত্রের মাধ্যমে এফআর টাওয়ারকে ১৯ তলা থেকে বাড়িয়ে ২৩ তলা করা, উপরের ফ্লোরগুলো বন্ধক দেওয়া ও বিক্রি করার অভিযোগে ২০ জনকে আসামি করা হয়।

অপর মামলাটি করা হয় এফআর টাওয়ারের ১৫ তলা পর্যন্ত নির্মাণের ক্ষেত্রে ইমারত বিধিমালা লঙ্ঘন এবং নকশা জালিয়াতির মাধ্যমে ১৮ তলা পর্যন্ত বাড়ানোর অভিযোগে।

এফআর টাওয়ারের মালিক এস এম এইচ আই ফারুক এবং নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রূপায়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান মুকুল দুই মামলারই আসামি।

১৯৯০ সালে পনের তলা ভবন নির্মাণের জন্য রাজউক থেকে অনুমতি নেয় এফআর  টাওয়ার কর্তৃপক্ষ। পরে সেই একই নকশা দেখিয়ে ১৯৯৬ সালে ১৫ তলার জায়গায় ১৮ তলা ভবন নির্মাণের অনুমোদন নেওয়া হয়।

দুদকের মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, ওই অনুমোদন দেওয়ার বিষয়টিও ছিল ‘অবৈধ’।

এফআর টাওয়ার পরে ২০০৩ সালে রূপায়ন হাউজিং লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি করে। সেই চুক্তি অনুযায়ী নির্মিত হয় ১৮ তলা ভবন। একই বছর রূপায়নের সঙ্গে সম্পূরক চুক্তি করে এফআর টাওয়ার। সেখানে  ভবনটি ২৩ তলায় উন্নীত করতে সম্মত হয় দুই পক্ষ। 

এজাহারে বলা হয়েছে, দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজের জন্য রাজউকের এস্টেট শাখা থেকে কোনো দরপত্র দেওয়া হয়নি। কোন ধরনের নকশা বা বিলও অনুমোদন করা হয়নি।

এর আগে এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশের করা মামলাতেও ফারুককে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সে সময় পুলিশ তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করেছিল। পরে তিনি ওই মামলায় জামিনে মুক্তি পান।