ওয়েজ বোর্ড: নোয়াবের বিরুদ্ধে সংবাদকর্মীদের সমাবেশ

নবম সংবাদপত্র মজুরি বোর্ড নিয়ে সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন নোয়াবের মামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করে তথ্য মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দিয়েছে সাংবাদিক-শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 August 2019, 12:50 PM
Updated : 18 August 2019, 12:50 PM

রোববার দুপুরে বিক্ষোভ সমাবেশের পর মিছিল নিয়ে মন্ত্রণালয়ে যাওয়ার পর একটি প্রতিনিধি দল স্মারকলিপি দিয়ে আসে।

সমাবেশে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে), ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে), ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, বাংলাদেশ সংবাদপত্র কর্মচারী ফেডারেশন, বাংলাদেশ ফেডারেল ইউনিয়ন অব নিউজপেপার প্রেস ওয়ার্কার্স এর নেতারা বক্তব্য দেন।

গত ৬ আগস্ট নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (নোয়াব) সভাপতি দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের করা এক রিট আবেদনে সংবাদপত্র ও বার্তা সংস্থার কর্মীদের বেতন বাড়াতে নবম ওয়েজবোর্ডের গেজেট প্রকাশের উপর দুই মাসের স্থিতাবস্থা জারি করে হাই কোর্ট।

নোয়াবের মামলায় মালিক ও গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে বৈরী সম্পর্ক সৃষ্টি করার পাশাপাশি মামলার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে সাংবাদিকদের সংগঠনগুলোর নেতারা।

সাংবাদিক-শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের অন্যতম নেতা বিএফইউজের সভাপতি মোল্লা জালাল সমাবেশে বলেন, “প্রয়োজনে আমরা আরও মজবুত আন্দোলন করে নোয়াবের খোয়াব ভেঙে দিতে হবে।

“নোয়াব কার স্বার্থে, কার ঈঙ্গিতে এই ঘৃণিত কাজে লিপ্ত হয়েছে? এই দেশদ্রোহিতার বিরুদ্ধে, যারা ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের উদ্দ্যেশ্যে এমন কাজ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা সার্বক্ষণিক সব ধরনের লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত থাকব।“

সমাবেশে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, “নোয়াব প্রকাশ্যে আমাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। সরকার পক্ষের কেউ এর ইন্ধনে আছে কি না, তাও আমাদের দেখতে হবে। নোয়াবের এই মামলার কারণে  মালিক ও গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে বৈরী সম্পর্ক সৃষ্টি করবে।”

সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আবদুল মজিদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক কবির আহমেদ খান, বাংলাদেশ সংবাদপত্র কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি মো. মতিউর রহমান তালুকদার, বাংলাদেশ ফেডারেল ইউনিয়ন অব নিউজপেপার প্রেস ওয়ার্কার্সের সভাপতি মো. আলমগী হোসেন খান।

২০১৫ সালে সরকারি কর্মচারীদের নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণার পর থেকেই নতুন বেতন কাঠামোর দাবি জানিয়ে আসছিল সাংবাদিকদের সংগঠনগুলো। এ দাবিতে তারা বিভিন্ন কর্মসূচিও পালন করেছেন।

দীর্ঘদিন বিষয়টি ঝুলে থাকার পর আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. নিজামুল হককে প্রধান করে গতবছর ২৯ জানুয়ারি ১৩ সদস্যের নবম ওয়েজবোর্ড গঠন করা হয়।

এরপর গত বছর ১১ সেপ্টেম্বর সংবাদপত্র ও বার্তা সংস্থার কর্মীদের জন্য মূল বেতনের ৪৫ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করে সরকার, যা ২০১৮ সালের ১ মার্চ থেকে কার্যকর করার কথা বলা হয়।

বিচারপতি নিজামুল হক গত ৪ নভেম্বর তখনকার তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর কাছে সংবাদকর্মীদের বেতন-ভাতা সর্বোচ্চ ৮৫ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশ করে তাদের প্রতিবেদন জমা দেন।

ওই প্রতিবেদন গত বছরের ৩ ডিসেম্বর মন্ত্রিসভার বৈঠকে তোলা হলে মন্ত্রিসভা তা পরীক্ষা করে সুপারিশ দিতে ওই সময়কর সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের একটি মন্ত্রিসভা কমিটি করে দেয়।

নতুন সরকার গঠনের পর গত ২১ জানুয়ারির মন্ত্রিসভা বৈঠকে আগের মন্ত্রিসভা কমিটি পুনর্গঠন করে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে সাত সদস্যের মন্ত্রিসভা কমিটি করে সরকার।

গত ২৫ জুলাই ওই কমিটির এক বৈঠকের পর ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, নবম ওয়েজবার্ডের সুপারিশ চূড়ান্ত করা হয়েছে। ওই সুপারিশ এখন মন্ত্রিসভায় পাঠানো হবে। মন্ত্রিসভার সম্মতি পেলেই তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে।

তা প্রকাশের আগেই নোয়াবের রিট আবেদন হল।