দায়িত্ব পালনের সময় আমরা কাউকে চিনব না: দুদক চেয়ারম্যান

দায়িত্ব পালনের সময় স্বজনসহ কারও প্রতি কোনো ধরনের পক্ষপাত না দেখানোর জন্য সংস্থার কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 August 2019, 11:15 AM
Updated : 15 August 2019, 11:18 AM

তিনি বলেছেন, “সকল প্রকার লোভ-লালসাকে জলাঞ্জলি দিয়ে নির্মোহভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। এ নির্মোহ দায়িত্ব পালনে আমাদের কোনো ভাই-বন্ধু বা স্বজন নেই, আমরা কাউকেই চিনি না। এমনটি হলেই জাতির পিতার প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হবে।”

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের বার্ষিকীতে জাতীয় শোক দিবসে বৃহস্পতিবার দুদক আয়োজিত আলোচনা সভায় একথা বলেন ইকবাল মাহমুদ।

জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনে তার পথ অনুসরণ করে সততা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে দুদকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, “প্রতি বছরই জাতির পিতার মহাপ্রয়াণ দিবসে আমরা আলোচনা সভা করি, কবিতা আবৃত্তি হয়, তথ্যচিত্র দেখি, আমরা শপথ গ্রহণ করি এবং কেন যেন মনে হয়, কেউ কেউ শপথ ভঙ্গও করি।

“শপথ যদি ভঙ্গ না হয়, তাহলে স্ব -স্ব দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সাথে পালন করার কথা। আমাদের সকলের মানসিকতার পরিবর্তন হওয়ার কথা, তা তো সেভাবে অনুধাবন করা যাচ্ছে না। মহান আল্লাহকে হাজির-নাজির রেখে আপনারা বলুন, আপনাদের দায়িত্ব কি সঠিকভাবে পালন করছেন ? এ ব্যাপারে আমার বেশ সংশয় রয়েছে।”

সবাইকে বিষয়টি উপলব্ধি করার পরামর্শ দিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, “আত্মজিজ্ঞাসার প্রয়োজন রয়েছে। নিজেকে নিজেই আবিষ্কার করুন। প্রতিটি অনুসন্ধান বা তদন্ত  সকল প্রকার লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে উঠে মোহমুক্ত থেকে করেন কি না?

“এর উত্তর আমি প্রত্যাশা করব 'হ্যাঁ', তবে সমাজের অনেকেই উত্তর দিবেন 'না'। আমাদেরকে সকল প্রকার চাপ, তা রাজনৈতিক হতে পারে, সামাজিক হতে পারে, পেশাগত হতে পারে, এসবের ঊর্ধ্বে থাকতে হবে।”

দুর্নীতি দমন কমিশনে যার যার কাজ ঠিক সময়ে না করলে অনিয়মের সুযোগ এবং প্রশ্ন ওঠার অবকাশ তৈরি হয় বলে মনে করেন ইকবাল মাহমুদ।  

“আমি কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে যোগদান করেই বলেছিলাম, প্রতিটি অভিযোগ নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। তারপর অনেকেই সময়ের স্বল্পতার কথা বললেন। আমরা বিধি পরিবর্তন করে সময় বাড়িয়ে দিয়েছি।

“তারপরও নির্ধারিত সময়ে অনুসন্ধান বা তদন্ত শেষ করা যাচ্ছে না কেন ? এই টাইম-লাইন না মানার কারণেই তদবিরবাজি হয়, ঘুষখোররা ঘুষ খাওয়ার সাহস পায় এবং সর্বোপরি কমিশনের ভাবমূর্তিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।"

শোক দিবসের এই আলোচনায় দুদক কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক খান, সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখ্ত, মহাপরিচালক এ কে এম সোহেল, পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন, আক্তার হোসেনসহ আরও অনেকে বক্তব্য দেন।