এর মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন এক পোশাককর্মী। আর মাগুরায় মারা গেছেন এক পঞ্চাশোর্ধ ব্যক্তি যিনি ঢাকায় একটি বেসরকারি নিরাপত্তা সেবার প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন।
ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. বাচ্চু মিয়া জানান, মৌসুমী বেগম নামের ২৫ বছর বয়সী এক নারী ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে বৃহস্পতিবার হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি হয়েছিলেন। বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
মৌসুমীর স্বামী মো. মামুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তাদের বাসা তালতলা মোল্লাপাড়ায়। মৌসুমী ৬০ ফুট এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। আর মামুন কাজ করেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে।
তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার সকালে মৌসুমীর জ্বর এলে শ্যামলীর একটি হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গু ধরা পড়ে। অবস্থার অবনতি হলে তাকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
কিন্তু সোহরাওয়ার্দীর চিকিৎসকরা মৌসুমীকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পরামর্শ দেন। বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ১০টায় মৌসুমীকে ঢাকা মেডিকেলের আইসিইউতে ভর্তি করার পর দুই ঘণ্টার মাথায় তার মৃত্যু হয় বলে জানান মামুন।
তাদের কোনো সন্তান নেই জানিয়ে মামুন বলেন, মৌসুমীর লাশ পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় তাদের গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হবে।
এদিকে মাগুরা সদর উপজেলার নরসিংহাটি গ্রামে জয়নাল শরীফ (৫২) নামে ডেঙ্গু আক্রান্ত এক ব্যক্তি বৃহস্পতিবার দুপুরে মারা যান বলে জেলার সিভিল সার্জন ডা. প্রদীপ কুমার সাহা জানান।
জয়নাল শরীফ নরসিংহাটি গ্রামের গফুর শরীফের ছেলে। ঢাকার একটি বেসরকারি নিরাপত্তা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে তিনি চাকরি করতেন।
তার ভাই হারুন অর রশিদ জানান, গত ৮ অগাস্ট ঢাকায় জ্বরে আক্রান্ত হলে জয়নালের ডেঙ্গু ধরা পড়ে।
ওই অবস্থায় জয়নাল বাড়িতে চলে যান এবং ১০ অগাস্ট মাগুরা হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানেও চিকিৎসকরা তার রক্ত পরীক্ষা করে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হন।
সেখানে জয়নালের অবস্থার অবনতি হলে মাগুরার চিকিৎসকরা তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু ফরিদপুরে নেওয়ার পর জয়নালের শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটে।
ফরিদপুরের চিকিৎসকরা ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দিলেও পরিবারের সদস্যরা বুধবার জয়নালকে মাগুরায় বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যান। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বাড়িতেই তার মৃত্যু হয় বলে জানান তার ভাই হারুন।
মাগুরার সিভিল সার্জন প্রদীপ কুমার সাহা বলেন, “আমাদের এখানে পরীক্ষা করেও জয়নালের ডেঙ্গু পাওয়া গিয়েছিল। পরিবারের সদস্যরা ঢাকায় না নিয়ে তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে এনেছিল। আজ বাড়িতেই সে মারা গেছে।”
সব মিলিয়ে এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৮ হাজার ২৮০ জন; যাদের মধ্যে ৭ হাজার ৫৭০ জন এখনও দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সরকার চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৪০ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করা হলেও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতাল ও জেলার চিকিৎসকদের কাছ থেকে অন্তত ১২৪ জনের তথ্য পেয়েছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।