বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টায় রাজধানীর ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে তার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তারা।
ফুল দেওয়ার পর সেখানে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান। সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল এ সময় সশস্ত্র সালাম জানায়; বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর।
এরপর কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে ১৫ অগাস্টের নিহতদের আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
স্বাধীনতার চার বছরের মধ্যে ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট সেনাবাহিনীর একদল কর্মকর্তা ও সৈনিকের হাতে সপরিবারে জীবন দিতে হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নায়ক, তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
জাতীয় এই শোকের দিনে বৃহস্পতিবার জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে, পালিত হচ্ছে নানা কর্মসূচি।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রাষ্ট্রপতি বঙ্গভবনের উদ্দেশ্যে রওনার হয়ে গেলে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ও প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
এরপর আওয়ামী লীগ সভানেত্রী হিসাবে শেখ হাসিনা দলের উপদেষ্টা মণ্ডলির সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ এবং কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যদের নিয়ে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে ফুল দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ হোসেনও ছিলেন সেখনে।
প্রধানমন্ত্রী চলে যাওয়ার পর ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর সবার শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য খুলে দেওয়া হয়। বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি হাজারো মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামের মহানায়ককের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান।
সেই রাতেই নিহত হন বঙ্গবন্ধুর বোনের স্বামী আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছেলে আরিফ, মেয়ে বেবী ও শিশুপৌত্র সুকান্ত বাবু; বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মণি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মণি, নিকট আত্মীয় শহীদ সেরনিয়াবাত ও রিন্টু।
ধানমণ্ডির বাড়িতে পুলিশের বিশেষ শাখার সাব ইন্সপেক্টর সিদ্দিকুর রহমান ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল জামিলকেও গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়।
বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকায় সে সময় প্রাণে বেঁচে যান। বঙ্গবন্ধুকে জন্মস্থান গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় দাফন করা হলেও পরিবারের অন্য সদস্যদের ঢাকার বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।
ধানমণ্ডি থেকে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতারা যান বনানী কবরস্থানে। সেখানে জাতির পিতার পরিবার সদস্য ও অন্যদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তারা। পরে সেখানে মোনাজাত ও মিলাদে অংশ নেন।
এরপর টুঙ্গিপাড়ায় গিয়ে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাবেন শেখ হাসিনা। বিকেলে বঙ্গবন্ধু ভবনে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। সেখানেও প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গভবনের দোয়া মাহফিলে রাষ্ট্রপতি উপস্থিত থাকবেন।
এদিন মিলাদ ও দোয়া হবে দেশের সব মসজিদে। মন্দির, প্যাগোডা ও গির্জাসহ সব উপাসনালয়ে হবে বিশেষ প্রার্থনা।