ঈদের ছুটি শেষে প্রথম কর্মদিবসে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
ঈদযাত্রা ‘মোটামুটি’ স্বস্তির বলে দাবি করলেও টাঙ্গাইলের জটে ভোগান্তির বিষয়টি স্বীকার করে নেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, “একটা রুট দু’দিন খুবই দুর্ভোগের কারণ হয়েছিল। সড়কেও হয়েছিল এবং টার্মিনালেও অপেক্ষমাণ যাত্রীরা দুর্ভোগের শিকার হয়েছিল; টাঙ্গাইল রুটে।
“… যেটা আমরা এক্সপেক্ট করিনি; তার চেয়ে বেশি হয়েছে। আমরা এবারের ভুল থেকে ভবিষ্যতে শিক্ষা নেব। এ ভুলের পুনরাবৃত্তি রোধে ফোরলেইন হওয়ার আগেই সেটা করব; এ ব্যাপারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে এবং আমরা সিরিয়াসলি বিষয়টা দেখছি।”
মানুষের দুর্ভোগে দুঃখ প্রকাশ করে ঈদের আগের দিন কাদের বলেছিলেন, মন্ত্রী হিসেবে তিনি নিজে এর ‘দায় এড়াতে পারেন না’।
আর ঈদের পর তিনি বললেন, অনেক চেষ্টা করেও ওই পরিস্থিতি ‘এড়ানো যায়নি’। এই ভোগান্তি লাঘবে ‘আরও অপেক্ষা’ করতে হবে।
টাঙ্গাইলের যানজটের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে কাদের বলেন, যে সমস্যা আগে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ছিল, তা এখানেও হয়েছে। চার লেইনের সড়ক যেখানে দুই লেইনে মিশেছে সেখানেই গাড়ির জট তৈরি হচ্ছে।
এই পথে দীর্ঘ সময় যানবাহনে আটকে থাকার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে কাদের বলেন “অনেক মানুষ কষ্ট করেছেন। গাড়ি দেরিতে আসার কারণে টার্মিনালেও বহু মানুষের কষ্টের সীমা ছিল না।”
তবে অন্য রুটে ঈদযাত্রায় ভোগান্তি ছিল না দাবি করে মন্ত্রী বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে নির্ধারিত সময়েই গাড়ি পৌঁছেছে। ঢাকা-সিলেট রুটও ভালো ছিল।
“ঢাকা-ময়মনসিংহ আমরা যতটা খারাপ হবে ভেবেছিলাম সেটা হয়নি। ঢাকা-ময়মনসিংহও স্বস্তিদায়ক ছিল।”
তবে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের ফেরির জন্য কিছুটা সমস্যা হওয়ার কথা স্বীকার করে মন্ত্রী বলেন, “পদ্মা-যমুনার তীব্র স্রোতের কারণে ফেরি চলাচল বিঘ্নিত হয়েছে। উভয় পাড়ে লম্বা টেইলব্যাকের সৃষ্টি হয়েছে এবং অনেক মানুষের কষ্ট হয়েছে।”
এলেঙ্গা থেকে রংপুর পর্যন্ত চার লেইনের কাজ শেষ হলে টাঙ্গাইল সড়কের ওপর চাপ কমবে বলে মনে করছেন কাদের।
তিনি বলেন, “তখন উত্তরবঙ্গের যাত্রীরা আরো স্বস্তি পাবে, ঢাকা-চট্টগ্রামের মত স্বস্তিদায়ক হবে। কাজেই যতদিন না ফোর লেইনের কাজটা শেষ হচ্ছে, এলেঙ্গা থেকে রংপুর, ততদিন পর্যন্ত এ দুর্ভোগ পোহাতে হবে, ভোগান্তির অবসান হবে না, এটাই স্বাভাবিক।”
তবে চার লেইনের কাজ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত এই ভোগান্তি কীভাবে একটু কমানো যায়, সে উপায় খোঁজার কথাও কাদের বলেছেন।
এর মধ্যে নলকা ব্রিজ প্রশস্ত করা এবং একটি বেইলি ব্রিজ করে ‘আপাতত’ সমাধানের চেষ্টা করা হবে বলে জানান কাদের।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ঈদের সময় এবার দুর্ঘটনা এবং প্রাণহানি গতবারের চেয়ে কম হয়েছে।
তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ৬ থেকে ১৩ অগাস্ট পর্যন্ত সড়ক পথে ৪৩টি দুর্ঘটনায় ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর গত রোজার ঈদের সময় সড়কে দুর্ঘটনায় ৬০ থেকে ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।