আনন্দের কমতি দেখিনি: নৌ প্রতিমন্ত্রী

নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ডেঙ্গু নিয়ে উদ্বেগ আর সড়ক ও রেলপথের ঈদযাত্রায় ভোগান্তি থাকলেও এবারের কোরবানির ঈদে মানুষের মধ্যে আনন্দের কমতি দেখেননি তিনি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 August 2019, 12:06 PM
Updated : 14 August 2019, 12:06 PM

এই ঈদে নৌপথের যাত্রীসেবা নিয়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট না হলেও অসন্তুষ্টি নেই বলে জানিয়েছেন তিনি।

ঈদের ছুটি শেষে বুধবার দুপুরে প্রথম কর্মদিবসে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন নৌ প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “এডিস মশা, ডেঙ্গুজ্বর- সব মিলে দেশে একটা অস্থিরতা আছে, এর মধ্যেও আমি মানুষের মধ্যে আনন্দের কোনো কমতি দেখিনি। সড়ক বা রেলপথে ২০ বা ৩০ ঘণ্টায় এলাকায় গেছে, আমি ঈদের আনন্দটা তাদের মধ্যে পেয়েছি।”

ঈদযাত্রায় এবার উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমের তিন বিভাগের যাত্রীদের রেল ও সড়ক দুই পখেই ভুগতে হয়েছে। সূচি বিপর্যয়ে রেলযাত্রীদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে ঢাকার কমলাপুর স্টেশনে। আর সড়কের যাত্রীদের টাঙ্গাইলে যানজটে বসে থাকতে হয়েছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

ঈদযাত্রার শুরুতে ফেরিঘাটে যানজটের ঝক্কি বাদ দিলে নৌপথে এবার ঈদযাত্রা মোটামুটি স্বস্তিদায়কই ছিল। সে কারণে প্রতিমন্ত্রী নিজেও খানিকটা স্বস্তিতে আছেন।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে সবাইকে নিয়ে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছিলাম, তাতে আমরা সন্তুষ্ট। আমরা পুরোপুরি সন্তুষ্ট না হলেও অসন্তুষ্টি নেই যাত্রী সেবার ক্ষেত্রে।”

আর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ঘাটের যানজটের দায় সড়কের দিকে ঠেলে দিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আমাদের ফেরিগুলো ফ্রিকোয়েন্টলি চলেছে, ফেরিতে কোনো জট নেই, জট রাস্তায়।”

ওই ঘাটে ২০টি ফেরির সবগুলোই ঈদের আগে সচল ছিল জানিয়ে খালিদ মাহমুদ বলেন, “কোনোটি কোথাও থেমে থাকেনি। বিশ্রামের সময়টাও যাত্রীসেবায় উৎসর্গ করেছে। শুধু যাত্রী পারাপারের জন্য পাঁচটি ফেরি দিয়েছিলাম। লাখ লাখ মানুষ ফেরিতে গেছে। কোরবানির গরুও ফেরিতে পার করেছি এবার।”

তিনি বলেন, ঈদের আগের দিন ঘাটে যানবাহন কম ছিল; ফেরি বসেছিল, কিন্তু বাস-ট্রাক ছিল না।

“সবচেয়ে বড় কথা, ঘাটে সিরিয়ালটা কখনও... হয়নি, সবাই মেনে চলেছে। কাউকে ওভারটেক করে ফেরিতে উঠে যাওয়া বা কোনো রকম সুবিধা নিয়ে উঠে যাওয়া- এটা যাতে না হয়, সেজন্য আমাদের কর্তৃপক্ষ খুব তৎপর ছিল।… রাস্তার মধ্যে যে যানজট থাকে, সেটা তো আমাদের বিষয় না।”

বাংলাদেশে কিছু রাজনৈতিক দল নিজেদের কর্মকাণ্ডের জন্য সঙ্কটে আছে এবং সেই সঙ্কট তারা দেশের মানুষের ওপরে চাপিয়ে দিতে চায় বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের অন্যতম সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

তিনি বলেন, “এডিস মশা নিয়েও রাজনীতি, পরিবহন ব্যবস্থা নিয়েও রাজনীতি। একটা শহর থেকে প্রায় দুই কোটি মানুষ বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছে, সেখানে কিছুটা দুর্বলতা থাকতে পারে। সেটা নিয়ে রাজনৈতিক করার কিছু নেই। বরং মানুষের পাশে দাঁড়ানোটাই রাজনীতি। এটা না করে সমালোচনা করলাম, এটা দায়িত্ব পালন করা হল না।”

এ বিষয়টিকে হজের সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন, “প্রত্যেক বছর সারা বিশ্ব থেকে ৪০ লাখ মানুষ যাচ্ছে। এতো সুব্যবস্থা থাকার পরও সঙ্কট আছে। সেখানে বাংলাদেশে একটা শহর থেকে দুই কোটি মানুষ বেরিয়ে যাচ্ছে, এই মানুষগুলোকে ম্যানেজমেন্ট করা দুঃসাধ্য ব্যাপার। তারপরও সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।"

কোরবানির চামড়া নিয়ে ‘সিন্ডিকেটের কারসাজির’ অভিযোগ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, কারা চামড়া মাটিতে পুঁতে ফেলছে সেটাও সাংবাদিকদের দেখা দরকার।

“এরা কারা? আমাদের দেশে তো দেশবিরোধী একটা বিরাট চক্র বিরাজমান।”

চামড়া শিল্পে যদি কোনো রকমের ব্যাঘাত ঘটে, সেটা বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় অবশ্যই দেখবে বলে মন্তব্য করেন নৌ প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “সব জায়গায় সিন্ডিকেট তৈরি করার প্রবণতা থাকলে তো হবে না। সরকার সঠিকভাবে দেশ পরিচালনা করছে। এত কিছুর মধ্যে দেশে কোনো ধরনের অস্থিরতা নেই। এটাকে অস্বাভাবিক করার একটা চেষ্টা চলছে।”