নগরজুড়ে পশু জবাই

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস ছিল, তবে ঈদের সকালে রাজধানীতে বাগড়া দেয়নি বৃষ্টি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 August 2019, 04:48 AM
Updated : 12 August 2019, 08:13 AM

ঈদের নামাজ শেষে গরু-ছাগল জবাই, মাংস বিলি আর রান্না-খাওয়ায় উৎসবের আমেজে ঈদুল আজহা উদযাপন করছেন সারাদেশের মুসলমানরা।

রাজধানীতে ঈদের প্রধান জামাত হয় সোমবার সকাল ৮টায় জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। রাষ্ট্রপ্রধান মো. আবদুল হামিদ, মন্ত্রিসভার সদস্য আর বিচারপতিসহ সর্বস্তরের মানুষ সেখানে ঈদের নামাজের পর দেশবাসীর কল‌্যাণ কামনায় মোনাজাতে হাত তোলেন।

ঈদ জামাত শেষে সবাই ব‌্যস্ত হয়ে পড়েন পশু কোরবানির তোড়জোড়ে। পরিবেশ দূষণ এড়াতে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন পশু জবাইয়ের স্থান নির্ধারণ করে দিলেও তাতে সাড়া মেলেনি এবারও। বরাবরের মতই নগরজুড়ে রাস্তা ও অলিগলিতে পশু জবাইয়ের দৃশ্য দেখা গেছে।

নির্ধারিত স্থানে না গিয়ে রাস্তায় পশু জবাইয়ের কারণ জানতে চাইলে সেগুনবাগিচার বাসিন্দা সোলায়মান আলম বলেন, “আমাদের আগ্রহ নাই। নির্ধারিত স্থানে ভিড়ভাট্টা, ঝামেলা লেগেই থাকে। তার চেয়ে নিজ দায়িত্বে কোরবানি দিয়ে পরিষ্কার করে ফেলব।”

সকালের ভাগে বৃষ্টি না হওয়ায় পশু কোরবানি ও মাংস প্রস্তুতের কাজে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়নি। তবে বিকালের ভাগে বৃষ্টি হলে কোরবানির পশু বর্জ্য অপসারণের কাজ অনেক সহজ হয়ে যাবে। 

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, বরিশাল, খুলনা ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায়, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে ঈদের দিন।

এদিকে কোরবানির পশুর বর্জ্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে অপসারণের ওপর জোর দিচ্ছে নগর কর্তৃপক্ষ। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম যত দ্রুত সম্ভব পশুর হাটের আবর্জনা ও অস্থায়ী স্থাপনা পরিষ্কার করবেন বলে কথা দিয়েছেন নগরবাসীকে।

উত্তর সিটি করপোরেশন এ বছর মহাখালী পশু জবাইখানাসহ ২৭৩টি স্থানে পশু কোরবানির ব্যবস্থা করেছে। এছাড়া কোরবানি করা যাবে এ রকম ৪০০টি স্থান চিহ্নিত করে দিয়েছে। আর দক্ষিণে ৬০২টি স্থান পশু কোরবানির জন্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।

সিটি করপোরেশনের হিসাবে কোরবানির ঈদে ঢাকায় পাঁচ লাখের মত পশু কোরবানি হয়। এসব পশুর বর্জ্য সরিয়ে নিতে মাঠে রয়েছেন দুই সিটি করপোরেশনের প্রায় ১৮ হাজার পরিচ্ছন্নতা কর্মী।

মহাখালী পশু জবাইখানায় যারা কোরবানির পশু নিয়ে আসবেন, তাদের পশু জবাই ও মাংস প্রস্তুত বাবদ ২৫ শতাংশ খরচ সিটি করপোরেশন বহন করবে বলে জানিয়েছেন উত্তরের মেয়র।

উত্তর সিটির পক্ষ থেকে এবার পশু কোরবানির জন্য ১০০ জন ইমাম এবং ২০০ জন মাংস প্রস্তুতকারীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

এবার কোরবানির পশুর হাটে প্রচুর বড় আকারের গরু উঠলেও ছোট ও মাঝারি গরুর চাহিদা ছিল বরাবরের মতই বেশি। শুরুতে দাম চড়া থাকলেও শেষে এসে দাম পড়ে যাওয়ায় হতাশার কথা শোনা গেছে ব্যাপারীদের মুখে।

ট্যানারি ব্যবসায়ীরা এবারও ঢাকায় লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া কিনবেন ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়; ঢাকার বাইরে এর দাম হবে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। এছাড়া সারা দেশে খাসির চামড়া ১৮-২০ টাকা এবং বকরির চামড়া ১৩-১৫ টাকায় সংগ্রহ করবেন ব্যবসায়ীরা।