বুধবার ‘ডেঙ্গু রোধে ঈদ যাত্রার পূর্বে সাবধানতা’ শিরোনামের এক তথ্য বিবরণীতে বিষয়গুলো জানানো হয়।
ঢাকাসহ শহরের খালি ঘরগুলোর কোনো স্থানে জমে থাকা পানি যাতে এইডিস মশার প্রজননস্থল হয়ে উঠতে না পারেম সেজন্যই এই সাবধানতা।
ডেঙ্গু জ্বরের জীবাণু বাহক মশা এইডিস এজিপ্টি প্রধানত শহরে পাওয়া যায়। তবে মানুষের ভ্রমণের কারণে বাংলাদেশজুড়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী পাওয়া যাচ্ছে।
কোরবানির ঈদের ছুটিতে লাখ লাখ মানুষের দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ভ্রমণের মধ্য দিয়ে ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বর আরও ছড়াতে পারে বলে উদ্বেগে রয়েছে সরকার।
প্রতিবার ঈদকে সামনে রেখে এক কোটির বেশি মানুষ ঢাকা থেকে বাড়িতে যান। ঈদযাত্রা শুরুর দিনে বুধবার সরকারের পক্ষ থেকে এই তথ্য বিবরণী এল।
যা করতে হবে
>> বাসার সব কক্ষের দরজা, জানালা ভালোভাবে বন্ধ করতে হবে
>> টয়লেটের কমোড ঢেকে যেতে হবে
>> বাথরুম/টয়লেটের জানালা বন্ধ রাখতে হবে
>> বালতি, বদনা ও ড্রাম খালি অবস্থায় উল্টো করে রেখে যেতে হবে
>> বারান্দায় ফুলের টব বা এমন কোনো পাত্র রেখে যাওয়া যাবে না, যেখানে বৃষ্টির পানি জমতে পারে
>> সোফা, পা ও ঝুলন্ত কাপড়ের নিচ লুকিয়ে থাকে এডিস মশা। এসব জায়গায় অ্যারোসল স্প্রে করে যেতে হবে
>> ফ্রিজের পানি জমার জায়গায় ন্যাপথলিন দিয়ে রাখতে হবে
>> রান্নাঘরে কোথাও যেন পানি জমে না থাকে, তা খেয়াল করতে হবে
>> যাওয়ার আগে ঘরের মেঝে, বারান্দা ও বাথরুম পরিষ্কার করে অ্যারোসল স্প্রে করে যেতে হবে
>> অব্যবহৃত বোতল বা কন্টেইনার নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলে দিতে হবে
কোরবানির ঈদে ১২ দিনের ছুটির মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতে এইডিস মশা বংশবিস্তার করতে না পারে, সেই বিষয়ে আলাদা পরিপত্র জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।
এতে বলা হয়, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১২ দিন বন্ধ থাকবে। স্বভাবতই এ সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে শিক্ষক-কর্মচারী উপস্থিত থাকেন না। এ সময়ে খেলার মাঠ, ফুলের টব, পানি জমে এমন যে কোনো পাত্রে এইডিস মশার প্রজনন প্রক্রিয়া আরও বেগবান হয়ে উঠতে পারে। এতে সরকার কর্তৃক গৃহীত ডেঙ্গু প্রতিরোধ কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত ও ডেঙ্গু আরও বিস্তার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।”
যেসব ব্যবস্থা নিতে হবে
>> ঈদের ছুটির সময় একজন শিক্ষকের নেতৃত্বে কর্মচারী, স্কাউট, বিএনসিসি এবং শিক্ষার্থী সমন্বয়ে ছয় থেকে ১০ জনের টিম গঠন করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং আশাপাশের সব জায়গায় স্বচ্ছ পানি জমার সম্ভাবনা থাকে (যেমন ফুলের টব, পানির ট্যাপের আশপাশের এলাকা, পানির পাম্প, ফ্রিজ বা এসির পানি জমার ট্রে, বাথরুমের পানির বদনা, বালতি, হাই কমোড, আইসক্রিম বক্স, ডাবের খোসা, টায়ার ইত্যাদি) সেসব জায়গা চিহ্নিত করে একদিন অন্তর অন্তর পরিষ্কার করতে হবে।
>> বাথরুমের বদনা এবং বালতি পানিশূন্য করে উল্টিয়ে রাখতে হবে। হাই কমোডে হারপিক ঢেলে ঢাকনা বন্ধ করে রাখতে হবে। বাথরুমের প্যানে হারপিক ঢেলে বস্তা বা অন্য কিছু দিয়ে মুখ বন্ধ করে রাখতে হবে।
>> কোনো জায়গায় জমাটবদ্ধ পানি থাকলে লার্ভিসাইড স্প্রে করতে হবে অথবা জমাটবদ্ধ পানি নিষ্কাশন করতে হবে।
>> ১২-১৩ অগাস্ট ছাড়া ছুটির অন্যান্য দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অফিস কক্ষ খোলা রাখতে হবে। রোস্টার ডিউটির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-কর্মচারীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
>> ডেঙ্গু প্রতিরোধ কার্যক্রমে সিটি করপোরেশন/ পৌরসভার এ সংক্রান্ত টিমে নিয়োজিত শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কেউ ঈদের ছুটিতে গেলে তার স্থলে উপযুক্ত শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।