মশার প্রজননস্থল ধ্বংস না হলে বাড়বে বিপদ: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ হাজার ছাড়ানোর মধ্যেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এডিস মশার প্রজননস্থানগুলো ধ্বংসে সফলতা না এলে এই রোগের প্রকোপ আরও বাড়তে পারে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 July 2019, 12:00 PM
Updated : 31 July 2019, 12:04 PM

বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক সেব্রিনা ফ্লোরা। তিনি বলেন, মশার প্রজননস্থল নির্মূলে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, “আমরা সবাই মিলেই জোরেশোরে অ্যাট সোর্স মশা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে যাচ্ছি। যসি সোর্স রিডাকশনে সফল হই তাহলে এটাকে থামাতে পারব। যদি কোনো কারণে কার্যকরভাবে এটা নিয়ন্ত্রণ করা না যায় তাহলে প্রতিবছর এটা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যায়। পিক টাইম সেপ্টেম্বরে। সুতরাং এখানে একটাই পদ্ধতি সেটা হচ্ছে সোর্স রিডাকশন।

“যত রকম ওষুধই ব্যবহার করি না কেন যদি সোর্স রিডাকশন না হয় এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব। যদি সোর্স রিডাকশনে আমরা সবাই মিলে কাজ না করি তাহলে ট্রেন্ড থামানো যাবে না। সেদিক থেকে প্রত্যেক নাগরিককে সচেতন করার দায়িত্ব আমাদের সবার। সেটা না হলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়বে। পরে আস্তে আস্তে কমে আসবে।”

সাধারণত অগাস্ট-সেপ্টেম্বরে দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দিলেও এ বছর জুনের শুরুতেই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের খবর আসতে থাকে। জুলাইয়ে এসে তা ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ে। মঙ্গলবার পর্যন্ত নেত্রকোণা ছাড়া সবগুলো জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের তথ্য পাওয়া গেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যে বলা হয়েছে, বুধবার (৩১ জুলাই) পর্যন্ত ১৭ হাজার ১৮৩ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৪ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তবে সংবাদপত্রে আসা খবরে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা এ বছর অর্ধশত ছাড়িয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক সানিয়া তহমিনা, জাতীয় ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচীর ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার এম এম আক্তারুজ্জামান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আয়েশা আক্তার উপস্থিত ছিলেন।

ডেঙ্গু পরীক্ষায় প্রয়োজনীয় রি-এজেন্টের সঙ্কট দেখা দেওয়ায় কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক সানিয়া তহমিনা বলেন, জরুরি ভিত্তিতে ৫০ হাজার এনএসওয়ান কিট আমদানি করা হচ্ছে।

“এগুলো যেহেতু দেশে তৈরি হয় না এজন্য এগুলো আনতে কিছুটা সময় লাগবে। তবে আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি এক সপ্তাহের বেশি সময় লাগবে না। এছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আরও এক লাখ কিট দেবে যেগুলো আমরা বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠিয়ে দেব। এগুলো বিনা পয়সায় দেওয়া হবে।”

ইতিমধ্যে ডেঙ্গু পরীক্ষায় ব্যবহৃত আরডিডি কিট সব জেলায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান সানিয়া তহমিনা। এছাড়া জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ডেঙ্গু গাইডলাইনও পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংসে প্রশিক্ষণ দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৪০০ দল ঢাকা শহরের সব প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের দুই লাখ শিক্ষার্থীর কাছে যাবে। তারা ডেঙ্গুর উৎসস্থল নির্মূলে কিভাবে করা যায় সে বিষয়ে শিশুদের প্রশিক্ষণ দেবে, তারা যেন আবার বাসায় গিয়ে তা প্রয়োগ করতে পারে।