মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাড্ডা থানার এসআই সোহরাব হোসেন বৃহস্পতিবার ওই পাঁচজনকে ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে বিচারক মো. তোফাজ্জল হোসেন তিন দিন হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।
এই পাঁচজন হলেন- মুরাদ মিয়া (২২), সোহেল রানা (৩০), মো. বিল্লাল (২৮), আসাদুল ইসলাম (২২) ও রাজু আহমেদ (২৩)।
রিমান্ড আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, হত্যাকাণ্ডের সময় ধারণ করা ভিডিও দেখে বাড্ডার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বুধবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা।
“হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত লাঠি উদ্ধারের পাশাপাশি অন্য আসামিদের শনাক্ত করা এবং গ্রেপ্তারের জন্য তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।”
এই রিমান্ড আবেদনের ওপর বাদীপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মাইদুল ইসলাম পলক। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী মৃণাল কান্তি মিত্র, ইউনুস আলীসহ অন্য আইনজীবীরা রিমান্ড আবেদনের বিরোধিতা করে জামিন চান।
আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, তাদের মক্কেলরা সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ, ওই ঘটনায় জড়িত ছিলেন না। ভিডিওতে তাদের দেখা গেছে- এমন কথাও রিমান্ড আবেদনে বলা হয়নি।
অন্যদিকে রিমান্ডের পক্ষে যুক্তি দিয়ে আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এস আই লিয়াকত আলী বলেন, “প্রকাশ্যে এ হত্যাকাণ্ডে জাতি শঙ্কিত। এখানে সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। তাদের নেপথ্যে কে রয়েছে রিমান্ডে নিয়ে সে তথ্য উদ্ধার করা জরুরি “
এর মধ্যেই গত শনিবার উত্তর বাড্ডার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তসলিমাকে (৪২) পিটিয়ে মারা হয়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি তার মেয়েকে ভর্তির খবর নিতে ওই বিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন।
এরপর তসলিমার বোনের ছেলে নাসির উদ্দিন টিটো বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয়ের ৪০০/৫০০ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন।
রেনুকে পিটিয়ে হত্যার সময় প্রত্যক্ষদর্শীদের ধারণ করা কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে ওই ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করতে কাজ করছে পুলিশ।
এরপর ওই হত্যাকাণ্ডের প্রধান সন্দেহভাজন ইব্রাহিম হোসেন হৃদয়কে মঙ্গলবার রাতে নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করার কথা জানানো হয় পুলিশের পক্ষ থেকে।
এ মামলায় সব মিলিয়ে মোট ১৩ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মধ্যে এক আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।