নবম ওয়েজবোর্ড: সুপারিশ চূড়ান্ত, যাবে মন্ত্রিসভায়

সংবাদপত্র ও বার্তা সংস্থার কর্মীদের বেতন বাড়াতে নবম ওয়েজবার্ডের সুপারিশ চূড়ান্ত করেছে এ সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 July 2019, 09:27 AM
Updated : 25 July 2019, 09:27 AM

চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য কমিটির এই সুপারিশ এখন মন্ত্রিসভায় পাঠানো হবে বলে কমিটির প্রধান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন।

সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এবং তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান উপস্থিত ছিলেন।

সভা শেষে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা রিপোর্টটি (নবম ওয়েজবোর্ড) চূড়ান্ত করেছি, কিন্তু এই চূড়ান্ত রিপোর্টই চূড়ান্ত নয়। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারে কেবলমাত্র মন্ত্রিসভা।”

স্টেক হোল্ডারেদের সঙ্গে আলোচনার পর মন্ত্রিসভা কমিটি যে প্রতিবেদন তৈরি করেছে তাকে ‘বাস্তবসম্মত এবং যুক্তিসঙ্গত’ বলে দাবি করেন তিনি।

কাদের বলেন, “এই রিপোর্টটি এখন কেবিনেট ডিভিশনে আমরা পাঠিয়ে দেব। কেবিনেট ডিভিশন থেকে মন্ত্রিসভা বৈঠকে উপস্থাপিত হবে এবং মন্ত্রিসভা বৈঠকের অনুমোদনের পর এটা গেজেট আকারে প্রকাশিত হবে।”

সুপারিশ চূড়ান্ত করা হলেও সে বিষয়ে কিছু জানাতে চাননি মন্ত্রিসভা কমিটির প্রধান ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, “মন্ত্রিসভার বিষয়টি আমরা কীভাবে বলব? আমরা রিপোর্টটি কেবিনেট ডিভিশনে পাঠিয়ে দিচ্ছি, সেখান থেকে মন্ত্রিসভায় যাবে, মন্ত্রিসভা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।

“অহেতুক আমরা এখন বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে জল্পনা-কল্পনা সৃষ্টি করতে চাই না। বাংলাদেশ এমনিতে গুজবের অনেক বড় ফ্যাক্টরি, এজন্য গুজব সৃষ্টি করতে চাই না, গুজবের ডালপালা বিস্তার করতে চাই না। মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত হয়েই যাবে, এটা ম্যাটার অব টাইম।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৫ অগাস্ট দেশে ফিরলে এরপর মন্ত্রিসভার যে কোনো বৈঠকে নবম ওয়েজবোর্ডের সুপারিশ তোলা হবে বলে জানান সড়ক পরিবহনমন্ত্রী।

ইলেকট্রানিক মিডিয়ার কর্মীদের ওয়েজবোর্ডের আওতায় আনা নিয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “গণমাধ্যমকর্মী আইন হবে, সেই আইনে সেটা থাকবে।”

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এ বিষয়ে বলেন, নবম ওয়েজবোর্ডের সুপারিশে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার জন্য আলাদা একটি নীতিমালা করার কথা বলা আছে। কিন্তু নবম ওয়েজবোর্ড শুধু সংবাদপত্রের জন্যই।

“কারণ নবম ওয়েজবোর্ডের ম্যান্ডেটের মধ্যে ইলেকট্রনিক মিডিয়া নেই। সে কারণে নবম ওয়েজবোর্ডে এটা (ইলেকট্রনিক মিডিয়া) অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভবপর নয়।”

গণমাধ্যম কর্মী আইনের খসড়া আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ে রয়েছে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ওই আইন পাস হলে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কর্মীদের বেতন কাঠামোর আওতায় আনা হবে।

২০১৫ সালে সরকারি কর্মচারীদের নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণার পর থেকেই নতুন বেতন কাঠামোর দাবি জানিয়ে আসছিল সাংবাদিকদের সংগঠনগুলো। এ দাবিতে তারা বিভিন্ন কর্মসূচিও পালন করেছেন।

দীর্ঘদিন বিষয়টি ঝুলে থাকার পর আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. নিজামুল হককে প্রধান করে গতবছর ২৯ জানুয়ারি ১৩ সদস্যের নবম ওয়েজবোর্ড গঠন করা হয়।

এরপর গত ১১ সেপ্টেম্বর সংবাদপত্র ও বার্তা সংস্থার কর্মীদের জন্য মূল বেতনের ৪৫ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করে সরকার, যা ২০১৮ সালের ১ মার্চ থেকে কার্যকর করার কথা বলা হয়।

বিচারপতি নিজামুল হক গত ৪ নভেম্বর তখনকার তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর কাছে সংবাদকর্মীদের বেতন-ভাতা সর্বোচ্চ ৮৫ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশ করে তাদের প্রতিবেদন জমা দেন।

ওই প্রতিবেদন গত বছরের ৩ ডিসেম্বর মন্ত্রিসভার বৈঠকে তোলা হলে মন্ত্রিসভা তা পরীক্ষা করে সুপারিশ দিতে ওই সময়কর সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের একটি মন্ত্রিসভা কমিটি করে দেয়।

নতুন সরকার গঠনের পর গত ২১ জানুয়ারির মন্ত্রিসভা বৈঠকে আগের মন্ত্রিসভা কমিটি পুনর্গঠন করে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে সাত সদস্যের মন্ত্রিসভা কমিটি করে সরকার।