ঢাকায় দুটি বোমা: ‘স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠীকে’ সন্দেহ পুলিশ প্রধানের

রাজধানী ঢাকার পল্টন ও খামার বাড়িতে পাওয়া বোমা দুটির পেছনে স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠী থাকতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক জাবেদ পাটোয়ারী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 July 2019, 01:38 PM
Updated : 24 July 2019, 01:38 PM

বুধবার পুলিশ সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “বোমা সদৃশ দুটি বস্তু দুটি এলাকায় পাওয়া গেছে। বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল দুটি বোমা নিষ্ক্রিয় করেছে। যেহেতু এটি বোমাসদৃশ বস্তু, এর মধ্যে বোমার কনটেন্ট কতটুকু ছিল, কী ছিল এগুলো বিশ্লেষণের বিষয়।"

সেজন্য কিছুটা সময় লাগবে জানিয়ে পুলিশ প্রধান বলেন, "আমরা মনে করি স্থানীয় যে সকল জঙ্গি গোষ্ঠী ইতোপূর্বে এখানে কাজ করেছে, এর পেছনে তারা সক্রিয় থাকলেও থাকতে পারে।"

তদন্ত যেহেতু এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, সেহেতু এ বিষয়ে এখনই সুনির্দিষ্ট কোনো মন্তব্য করার পক্ষপাতী নন  পুলিশ মহাপরিদর্শক।

তিনি বলেন, "আমরা বিষয়টি পুরোপুরি দেখে হয়তো... যখন আপনাদের কাছে বলার মত কিছু হবে নিশ্চয় আমরা ওই ব্যাপারে আপনাদেরকে ডিটেইল বলব।"

মঙ্গলবার রাতে পল্টন ও খামারবাড়ি এলাকায় দুটি পুলিশ বক্সের কাছে বোমা পাওয়ার পর সেগুলোতে নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ ঘটায় পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট।

মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে পল্টন মোড়ে ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সামনে একটি কার্টন দেখে কৌতূহলী হন পুলিশ সদস্যরা। ওই কার্টনের ভেতর তার প্যাঁচানো একটি বস্তু দেখে পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দলকে ডাকা হয়। পরে তারা গিয়ে ওই বোমার বিস্ফোরণ ঘটান।

কাছাকাছি সময় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের খামারবাড়ি প্রান্তে ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সামনে একই ধরনের একটি বস্তু দেখা গেলে সেখানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

পরে পুলিশ সদস্যরা গিয়ে ওই এলাকা ঘিরে ফেলেন, বন্ধ করে দেয়া হয় যান চলাচল। রাত দেড়টার দিকে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দলের সদস্যরা সেখানে কাজ শুরু করেন।

রোবট ব্যবহার করে পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে রাত ৩টার দিকে ওই বোমার নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ ঘটানো হয় বলে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার আনিসুর রহমান জানান।

পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের উপ কমিশনার প্রলয় কুমার জোয়ারদার সে সময় সাংবাদিকদের বলেন, দুটি বোমা থেকেই আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষা করে দেখা হবে সেগুলো কোন ধরনের বিস্ফোরক এবং কতটা শক্তিশালী ছিল।

“অ্যাপারেন্টরি মনে হচ্ছে, এটা তো কোনা ভালো লোকের কাজ না, আতঙ্ক সৃষ্টি করা, অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যেই এটা করা হয়েছে।”

এর আগে চলতি বছরের এপ্রিল ও মে মাসে পুলিশকে লক্ষ্য করে দুটি বোমা হামলার ঘটনা ঘটে,যেগুলোর তদন্ত করছে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট।

এর মধ্যে ৩০ এপ্রিল গুলিস্তানে ট্রাফিক পুলিশকে লক্ষ্য করে হাতবোমা ছোড়া হয়। দুই ট্রাফিক পুলিশ এবং কমিউনিটি পুলিশের এক সদস্য ওই ঘটনায় আহত হন।

আর ২৬ মে রাতে মালিবাগে এসবি অফিসের সামনে এসবির একটি পিকআপে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। হঠাৎ ওই বিস্ফোরণে ট্রাফিক পুলিশের এএসআই রাশেদা আক্তার (২৮) এবং রাস্তায় থাকা রিকশাচালক লাল মিয়া (৫০) আহত হন।

দুই ঘটনাতেই জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের নামে দায় স্বীকারের বার্তা দেওয়া হয়। কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে আইএসের দাবি উড়িয়ে দিয়ে বলা হয়, এদেশের কেউ। পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে এ ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে।