সুযোগসন্ধানীদের অস্থিরতা তৈরির সুযোগ দেওয়া যাবে না: রাষ্ট্রপতি

সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করে সুযোগ সন্ধানীরা যেন ফায়দা লুটতে না পারে, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে সরকারি কর্মকর্তাদের পরামর্শ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 July 2019, 12:18 PM
Updated : 23 July 2019, 12:55 PM

তিনি বলেছেন, “সামাজিক বিভিন্ন ইস্যুতে অস্থিরতা তৈরি করে সুযোগসন্ধানীরা যাতে কোনো ধরনের ফায়দা লুটতে না পারে সে ব্যাপারে আপনাদের সচেতন থাকতে হবে। তৃণমূল পর্যায়েও ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।”

ছেলেধরা গুজব ছড়িয়ে গত কয়েকদিনে গণপিটুনিতে কয়েকটি মৃত্যুর ঘটনার প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার ঢাকায় ‘জনপ্রশাসন পদক ২০১৯’ প্রদান অনুষ্ঠানে একথা বলেন রাষ্ট্রপতি।

সরকারি কর্মচারীদের ঔপনিবেশিক মানসিকতা পরিহারের আহ্বানও জানান তিনি।

তিনি বলেন, “ব্রিটিশরা পাক-ভারত উপমহাদেশে প্রশাসন ব্যবস্থা চালু করেছিল উপমহাদেশকে শাসন করতে এবং এ দেশের ধনসম্পদ শোষণ করার লক্ষ্যে। তখন প্রশাসনের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল উপমহাদেশে তাদের শাসন কায়েম রাখা ও শোষণ নীতি বজায় রাখা। জনকল্যাণ ছিল গৌণ লক্ষ্য।

“এখন আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক। এখন প্রশাসনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে জনগণকে সেবা দান করা। তাই প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের সনাতন দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আনার বিকল্প নেই। মনে রাখবেন, জনগণের জন্য প্রশাসন, প্রশাসনের জন্য জনগণ নয়।”

নাগরিকদের অর্থে যে সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা হয়, তা তাদের মনে করিয়ে দেন রাষ্ট্রপ্রধান। জনগণকে সেবার দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের শৈথিল্য না দেখাতে বলেন তিনি।

সরকারি অফিসের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার তাগিদ দিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, “সরকারি অনেক সংস্থা থেকেই জনগণকে স্বচ্ছতা ও আন্তরিকতার সাথে সেবা দেওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু সেবাপ্রত্যাশীদের মাঝে এই সেবা পাওয়ার ব্যাপারে আস্থাহীনতা কাজ করে। তাই কোনো রকম তদবির বা যোগাযোগ ছাড়াই যে সরকারি সেবা পাওয়া যায় জনমনে সে আস্থা তৈরি করতে হবে।"

সরকারি বিভিন্ন অফিসে সিটিজেন চার্টার অনুযায়ী সেবাপ্রত্যাশীরা সেবা পাচ্ছেন কি না, তা তদারকিতে জোর দেন তিনি।

উন্নয়ন প্রকল্প বাছাইয়ে জনস্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, “আপনারা জানেন, উন্নয়ন চাহিদার তুলনায় আমাদের সম্পদ সীমিত। তাই পরিকল্পনা প্রণয়নের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার চিহ্নিত করতে হবে। পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে আপনাদের ভূমিকা খু্বই গুরুত্বপূর্ণ। প্রকল্প বাছাইয়ের ক্ষেত্রে জনস্বার্থকে অগ্রাধিকার দেবেন।”

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “গ্রামে-গঞ্জে দেখা যায়, অপরিকল্পিত রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণের ফলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। অনেক সময় নির্মাণ কাজের মান এতটাই খারাপ হয় যে কাজ শেষ না হতেই আবার মেরামতের প্রয়োজন হয়। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।”

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের ওই অনুষ্ঠানে ৪৫ জন ব্যক্তি ও দুই প্রতিষ্ঠানকে পদক দেওয়া হয়।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এইচ এন আশিকুর রহমান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম, জনপ্রশাসন সচিব ফয়েজ আহম্মদ।