দুদকের এনামুল বাছিরও গ্রেপ্তার

ঘুষ লেনদেনের মামলায় ডিআইজি মিজানুর রহমানের পর দুর্নীতি দমন কমিশনের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরও গ্রেপ্তার হলেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 July 2019, 05:22 PM
Updated : 22 July 2019, 05:52 PM

শেখ মো. ফানাফিল্যা নেতৃত্বাধীন দুদকের এই সংক্রান্ত তদন্ত দল সোমবার রাতে ঢাকার দারুস সালাম এলাকা থেকে বাছিরকে গ্রেপ্তার করে বলে জানিয়েছেন কমিশনের জনসংযোগ শাখার উপ-পরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গ্রেপ্তারের পর এনামুল বাছিরকে রমনা থানায় নেওয়া হয়েছে।

এই মামলায় একদিন আগেই পুলিশ কর্মকর্তা মিজানকে গ্রেপ্তার দেখায় দুদক। তিনি অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় আগে থেকে কারাগারে রয়েছেন।

ডিআইজি মিজানের সঙ্গে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগের তদন্ত শুরুর পর দুদক থেকে বরখাস্ত হন এনামুল বাছির। এরপর তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল।

ডিআইজি মিজানের সম্পদ অনুসন্ধানে গিয়ে তার কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে  এখন নিজের সংস্থার কর্মকর্তাদের হাতে গ্রেপ্তার হতে হল বাছিরকে।

ডিআইজি মিজানের কাছ থেকে ঘুষ: দুদক পরিচালক বাছির সাময়িক বরখাস্ত

কাজটি করেছি তাকে ফাঁসাতে, নিজেকে বাঁচাতে: ডিআইজি মিজান

ঘুষের অভিযোগ মিথ্যা, পারলে প্রমাণ করেন: দুদকের বাছির

কেউ ধোয়া তুলসিপাতা নয়: দুদক নিয়ে প্রধানমন্ত্রী

৪০ লাখ টাকা ঘুষ: পুলিশের মিজান, দুদকের বাছিরের বিরুদ্ধে মামলা  

কেউ ধোয়া তুলসিপাতা নয়: দুদক নিয়ে প্রধানমন্ত্রী

এক নারীকে জোর করে বিয়ের পর নির্যাতন চালানোর অভিযোগ ওঠায় গত বছরের জানুয়ারিতে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনারের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় ডিআইজি মিজানুর রহমানকে।

এর চার মাস পর তার সম্পদের অনুসন্ধানে নামে দুদক; এক হাত ঘুরে সেই অনুসন্ধানের দায়িত্ব পান এনামুল বাছির।

সেই অনুসন্ধান চলার মধ্যেই ডিআইজি মিজান গত ৮ জুন দাবি করেন, দুদক কর্মকর্তা বাছির তার কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন।

এর পক্ষে তাদের কথপোকথনের কয়েকটি অডিও ক্লিপ একটি টেলিভিশনকে দেন তিনি। ওই অডিও প্রচার হওয়ার পর দেশজুড়ে শুরু হয় আলোচনা।

মামলার আরেক আসামি মিজানুর রহমান

ডিআইজি মিজান দাবি করেন, সব জেনেশুনেই তিনি কাজটি করেছেন। নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং বাছির যে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’, তা প্রমাণে ‘বাধ্য হয়ে’ এই কাজ করেন তিনি।

তবে বাছির ডিআইজি মিজানের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলে আসছিলেন, ‘সব বানোয়াট’।

কিন্তু দুদকের পরিচালক ফানাফিল্যার এক চিঠিতে প্রকাশ পেয়েছে যে বাছিরের ঘুষ নেওয়ার প্রমাণ পেয়েছেন তারা।

বাছিরের দেশত্যাগ ঠেকাতে পুলিশের বিশেষ শাখায় পাঠানো তার চিঠিতে বলা হয়, “ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির (খন্দকার এনামুল বাছির) ঘুষ লেনদেন ও মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগের সত্যতা দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধানের প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে।”

ফানাফিল্যার দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়, “খন্দকার এনামুল বাছির সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে কমিশনের দায়িত্ব হতে অর্পিত দায়িত্ব পালনকালে অসৎ উদ্দেশ্যে নিজে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার আশায় ক্ষমতা অপব্যবহারের মাধ্যমে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ডিআইজি মিজানুর রহমানকে অবৈধ সুযোগ প্রদানের হীন উদ্দেশ্যে ডিআইজি মিজানুর রহমার থেকে তার অবৈধ পন্থায় অর্জিত অপরাধলব্ধ ৪০ লাখ টাকা উৎকোচ/ঘুষ হিসেবে গ্রহণ করে উক্ত টাকার অবস্থান গোপন করেন।”