বাড্ডায় পিটিয়ে হত্যা: গ্রেপ্তার ৬, একজনের স্বীকারোক্তি, ৩ জন রিমান্ডে

ঢাকার বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে তাসলিমা বেগম রেনুকে পিটিয়ে হত্যার মামলায় গ্রেপ্তার ছয় আসামির একজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 July 2019, 10:40 AM
Updated : 22 July 2019, 06:19 PM

তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চার দিনের হেফাজতে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে আদালত। বাকি দুজনকে এখনও আদালতে তোলা হয়নি।

গুজব ছড়িয়ে গণপিটুনির কয়েকটি ঘটনার মধ্যে গত শনিবার সকালে উত্তর বাড্ডার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তসলিমাকে (৪২) পিটিয়ে মারা হয়।

এঘটনায় করা হত্যা মামলায় রোববার রাতে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়, যাদের সোমবার পাঠানো হয় ঢাকার আদালতে।

এদের মধ্যে রোববার মধ্যরাতে গ্রেপ্তার জাফর বিচারকের কাছে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন বলে বাড্ডা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

বাকি তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের হেফাজতের আবেদন করা হলে ঢাকার মহানগর হাকিম ধীমান চন্দ্র মণ্ডল ৪ দিনের হেফাজতে নেওয়ার আদেশ দেন বলে আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই লিয়াকত আলী জানিয়েছেন।

এরা হলেন- বরগুনার তালতলী উপজেলার গাবতলী হাওলারদার বাড়ির বাসিন্দা শাহীন (৩১), ময়মনসিংহের ধোবাউরা উপজেলার দরশা গ্রামের বাসিন্দা বাচ্চু মিয়া (২৮) এবং উত্তর বাড্ডা কাঁচা বাজারের ফারুকের মুদি দোকানের কর্মী বাপ্পী (২১)।

সোমবার সন্ধ্যার পর আবুল কালাম আজাদ (৫০) ও কামাল হোসেন (৪০) নামে দুজনকে বাড্ডা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে বাড্ডা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রাজ্জাক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “এ নিয়ে মোট ছয়জন গ্রেপ্তার হল। এর মধ্যে তিনজন রিমান্ডে রয়েছে এবং একজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার পর কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

রাজ্জাক জানান, তসলিমাকে পেটানোর ঘটনায় মূল আসামি হিসেবে হৃদয় নামে একজনকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজে ‘মানুষের মাথা লাগবে’ বলে সম্প্রতি ফেইসবুকে গুজব ছড়ানো হয়, যাতে বিভ্রান্ত না হতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল সরকার। গুজব ছড়ানোর অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়।

এর মধ্যে বৃহস্পতিবার নেত্রকোণা শহরে এক যুবকের ব্যাগ তল্লাশি করে ‘শিশুর মাথা’ পাওয়ার পর তাকে পিটিয়ে হত্যা করে এলাকাবাসী। এই ঘটনার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে ছেলেধরা সন্দেহে আক্রমণের ঘটনা ঘটছে।

এর মধ্যেই শনিবার লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দা তসলিমাকে পিটিয়ে মারা হয়। তার বোনের ছেলে নাসির উদ্দিন টিটো বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয়ের ৪০০/৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তসলিমা তার মেয়েকে ভর্তির খবর নিতে ওই বিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন।