রাজস্ব আহরণে সম্পৃক্ত হতে ডিসিদের প্রস্তাব নিয়ে আপত্তি

সরকারের রাজস্ব আহরণ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হওয়ার যে প্রস্তাব জেলা প্রশাসক সম্মেলনে এসেছে, তাতে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে বিসিএস (কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট) ও বিসিএস (ট্যাক্সেশন) অ্যাসোসিয়েশন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 July 2019, 05:21 PM
Updated : 5 July 2020, 12:39 PM

জেলা প্রশাসকদের এই প্রস্তাবকে ‘দুরভিসন্ধিমূলক’ আখ্যায়িত বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে তারা বলছে, এটি গৃহীত হলে জাতীয় রাজস্ব আহরণ কার্যক্রমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে।

ডিসি সম্মেলনে বুধবারের একটি কার্য অধিবেশনে স্থানীয়ভাবে সরকারের রাজস্ব আহরণ বাড়াতে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে ডিসি-ইউএনওদের নেতৃত্বে কমিটি চান জেলা প্রশাসকরা।

জেলা প্রশাসকদের এই প্রস্তাবকে ‘ভালো’ বলার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা মশিউর রহমান বলেন, রাজস্ব আদায় বাড়াতে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে জনবল বাড়ানোর প্রস্তাব এনবিআরের রয়েছে। জেলা প্রশাসকদের প্রস্তাবের সঙ্গে এনবিআরের প্রস্তাবের সমন্বয় প্রয়োজন হবে। তখন বিষয়টি আরও বিস্তারিতভাবে পরীক্ষা করা যাবে।

গণমাধ্যমে এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন দেখে বিসিএস (কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট) ও বিসিএস (ট্যাক্সেশন) অ্যাসোসিয়েশন বিবৃতিতে বলেছে, এই ধরনের ‘অযৌক্তিক, এখতিয়ার বহির্ভূত’ দাবি ওঠায় তারা ক্ষুব্ধ ও উদ্বিগ্ন।

বিসিএস (কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট) অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি খন্দকার মো. আমিনুর রহমান ও মহাসচিব সৈয়দ মুসফিকুর রহমান এবং বিসিএস (ট্যাক্সেশন) অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সেলিম আফজাল ও মহাসচিব নূরুজ্জামান খান যৌথভাবে এই বিবৃতি দেন।

বিবৃতিতে তারা বলেন, সরকারের ২৮টি ক্যাডারের প্রত্যেকটির কর্মের পরিধি ও প্রকৃতি সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারিত। রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী রাজস্ব আহরণ ও এই সংক্রান্ত নীতি নির্ধারণী কার্যকম পরিচালিত হয় বিসিএস (কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট) ও বিসিএস (ট্যাক্সেশন) ক্যাডারের মাধ্যমে। এই দুই ক্যাডারের কর্মকর্তারা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশনা অনুসরণ করে সরকারের রাজস্ব আদায় করে থাকে।

ডিসি সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী এই কর্মকর্তারা প্রশাসন ক্যাডারের (ফাইল ছবি)

প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা ডিসিদের প্রস্তাবের প্রসঙ্গ ধরে বিবৃতিতে বলা হয়, “এই ধরনের প্রস্তাব কেবল অন্যান্য পেশাভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব আইনের আওতায় পরিচালিত কার্যক্রমের উপর অবৈধ ও এখতিয়ার বহির্ভূত হস্তক্ষেপই নয়, বরং এর মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব আহরণ কার্যক্রমে একটি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।”

আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা আনতে সরকারের তৎপরতার মধ্যে এই প্রস্তাব আনার পেছনে ‘দুরভিসন্ধি’ রয়েছে সন্দেহ করে বিবৃতিতে বলা হয়,  এর উদ্দেশ্য খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।

প্রশাসন ক্যাডারের উপর ন্যস্ত ভূমি রাজস্ব আহরণ কার্যক্রমে বিশৃঙ্খলা রয়েছে দাবি করে তাদের নতুন দায়িত্ব নেওয়ার প্রস্তাব ‘উদ্দেশ্যমূলক’ মনে করছে বিসিএস (কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট) ও বিসিএস (ট্যাক্সেশন) অ্যাসোসিয়েশন।

বিবৃতিতে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের বিদ্যমান আয়কর ও ভ্যান আইনে রাজস্ব আহরণের যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তা পালনে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

ডিসিদের ওই প্রস্তাব গ্রহণ না করতেও সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে বিসিএস (কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট) ও বিসিএস (ট্যাক্সেশন) অ্যাসোসিয়েশন।