দ্বাদশ শ্রেণির গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার পর্যায়ে পা রাখতে যাওয়া এই শিক্ষার্থীদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন মোট ৪৭ হাজার ২৮৬ জন শিক্ষার্থী।
গত বছর এ পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৬৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছিল ২৯ হাজার ২৬২ জন।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বুধবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ফলাফলের সারসংক্ষেপ হস্তান্তর করেন। শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীসহ বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন।
পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট সবাইকে শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এবার পরীক্ষা হয়েছে ‘সুন্দর’ পরিবেশে।
“এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং নকল সর্বোতভাবে বন্ধ হয়েছে। পরীক্ষা নিয়ে কোনো বিভ্রান্তি প্রতারণা কিংবা গুজবের সৃষ্টি হয়নি।“
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৭৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ পাসের হারকে ‘যথেষ্ট গ্রহণযোগ্য ও ভালো’ ফলাফল হিসেবে বর্ণনা করেন।
“কারণ আমি মনে করি ছেলেমেয়েরা ফেল করবে কেন? আমরা কতগুলো উদ্যোগও নিয়েছি যাতে আমাদের ছেলেমেয়েরা পড়ালেখায় মনোযোগী হয়।”
যারা এবার পাস করেছে তাদের অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী। আর যারা পাস করতে পারেনি তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “মন খারাপ করার কিছু নেই, আবার পরীক্ষা দেবে…।
“এখন তো আরেকটা সুবিধাও আমরা করে দিয়েছি নীতিমালায়। একটা বা দুটো বিষয়ে যদি ফেল করে সেগুলোই আবার দিতে হবে, পুনরায় সব পরীক্ষা আবার দিতে হবে না।”
শেখ হাসিনা বলেন, “আমারা এ সুযোগগুলো সৃষ্টি করে দিয়েছি যতে আমাদের ছেলেমেয়েরা পাস করে, তারা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে, স্বউদ্যোগে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারে, এবং বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ করতে পারে।”
এক নজরে ফলাফল
বোর্ড | পাসের হার (%) | জিপিএ-৫ (জন) | পাসের হার (%) | জিপিএ-৫ (জন) |
| ২০১৯ | ২০১৮ | ||
ঢাকা | ৭১.০৯ | ১৮,১৮৭ | ৬৬.১৩ | ১২,৯৩৮ |
রাজশাহী | ৭৬.৩৮ | ৬,৭২৯ | ৬৬.৫১ | ৪,১৩৮ |
কুমিল্লা | ৭৭.৭৪ | ২,৩৭৫ | ৬৫.৪২ | ৯৪৪ |
যশোর | ৭৫.৬৫ | ৫,৩১২ | ৬০.৪০ | ২,০৮৯ |
চট্টগ্রাম | ৬২.১৯ | ২,৮৬০ | ৬২.৭৩ | ১,৬১৩ |
বরিশাল | ৭০.৬৫ | ১,২০১ | ৭০.৫৫ | ৬৭০ |
সিলেট | ৬৭.০৫ | ১,০৯৪ | ৬২.১১ | ৮৭৩ |
দিনাজপুর | ৭১.৭৮ | ৪,০৪৯ | ৬০.২১ | ২,২৯৭ |
মাদ্রাসা | ৮৬.৫৬ | ২,২৪৩ | ৭৮.৬৭ | ১,২৪৪ |
কারিগরি | ৮২.৬২ | ৩,২৩৬ | ৭৫.৫০ | ২,৪৫৬ |
ডিআইবিএস (ঢাকা) | ৬০.০০ | ০০ | ৮৭.৮২ | ০০ |
মোট | ৭৩.৯৩ | ৪৭,২৮৬ | ৬৬.৬৪ | ২৯,২৬২ |
চলতি বছর ১ এপ্রিল থেকে ২৩ মে দেশের দুই হাজার ৫৬০টি কেন্দ্রে এইচএসসি ও সমমানের লিখিত ও ব্যবহারিক পরীক্ষা চলে।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, দশ শিক্ষা বোর্ডে এবার সব মিলিয়ে পরীক্ষার্থী ছিল ১৩ লাখ ৩৬ হাজার ৬২৯ জন। তাদের মধ্যে পাস করেছে ৯ লাখ ৮৮ হাজার ১৭২ জন।
মাদ্রাসা বোর্ডে এবার পাস করেছে ৮৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ২ হাজার ২৪৩ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।
আর কারিগরি ও ভোকেশনাল বোর্ডে পাসের হার এবার ৮২ দশমিক ৬২ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ হাজার ২৩৬ জন।
এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ৪১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থী পাস করতে পারেনি। আর ৯০৯টি প্রতিষ্ঠান থেকে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া সব শিক্ষার্থীই পাস করেছে।
বেশ কয়েক বছর ধরে পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে ফাঁস হলেও এবার প্রশ্ন ফাঁসের কোনো ধরনের অভিযোগ ছাড়াই উচ্চ মাধ্যমিকের সব পরীক্ষা শেষ হয়।
দুপুরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষামন্ত্রী এবারের ফলাফলের বিভিন্ন দিক তুলে ধরার পর শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট (www.educationboardresults.gov.bd) এবং নিজের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও যে কোনো মোবাইল থেকে এসএমএস করে ফল জানতে পারবে শিক্ষার্থীরা।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব কমিটি জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ই-মেইলে কেন্দ্র ও প্রতিষ্ঠানের ফলাফলের সফটকপি পাওয়া যাবে।
প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তর থেকে ফলের হার্ডকপি সংগ্রহ করা যাবে। বোর্ড থেকে ফলাফলের কপি সরবরাহ করা হবে না।